নড়াইলের লোহাগড়ার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সংর*ক্ষণ করা হলে হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র

137
82
নড়াইলের লোহাগড়ার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সংর*ক্ষণ করা হলে হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র
নড়াইলের লোহাগড়ার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সংর*ক্ষণ করা হলে হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র

আবদুস ছালাম খান (লেখক সি*নিয়র আই*নজীবী ও সাংবাদিক এবং সভাপতি লোহাগড়া প্রেসক্লা*ব)

নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছ*ড়িয়ে-ছি*টিয়ে থাকা প্রা*চীন স্থা*পনাগু*লি অর্থাৎ প্রত্নতাত্তিক নিদর্শ*নগুলিকে সংর*ক্ষিত পু*রাকী*র্তি ঘো*ষণা করে সংর*ক্ষণ ও সং*স্কার করা হলে পর্য*টকদের কাছে হতে পারে আক*র্ষনীয় পর্যট*ন কেন্দ্র। একইভাবে এসব প্র*ত্নতাত্ত্বিক নিদ*র্শণগুলি গবেষকদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে পারে।

লোহাগড়ার ন্যায় বাংলাদেশের আর কোন উপজেলায় এতগুলি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থাকার ন*জীর নেই বললেই চলে। অথচ দু*র্মূল্য এসব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি সংর*ক্ষণের কোন উদ্যেগ নেই বললেই চলে। পু*রাকী*র্তি হিসাবে বি*বেচিত হতে পারে এমন প্রাচীন স্থা*পনাগুলির অধিকাংশই সংর*ক্ষণের অ*ভাবে বিলু*প্ত হ*য়ে যাচ্ছে। প্র*তিকূ*ল পরিবে*শ ও অ*স*ৎ লোকেদের *হা*ত থেকে যেগু*লি এখনও টি*কে আছে সেগুলিও অ*য*ত্ন-অ*বহে*লায় ধং*সস্তু*পে প*রিণ*ত হয়েছে। এখনও যা টি*কে আছে তা সং*র*ক্ষণ করা হলে লোহাগ*ড়া উপজেলা হ*তে পারে বাংলাদেশের সেরা প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যটন কেন্দ্র। যা পু*রাকী*র্তি গবে*ষকদের কাছে তী*র্থভূ*মি হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।

পু*রাকী*র্তি নিয়ে গবেষণা যেমন দিনদিন বৃ*দ্ধি পা*চ্ছে তেমনি গবে*ষকদের সংখ্যাও বৃ*দ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে সুলতা*নি বা মোগল আ*মলের স্থা*পনা , হিন্দুমন্দির স্থা*প*ত্য, পো*ড়া মা*টির বি*ভি*ন্ন ফ*ল*ক বা অ*লঙ্ক*রণ নিয়ে গবে*ষণা দিন দিন বৃ*দ্ধি পাচ্ছে। এসব নিয়ে গবে*ষণায় আগ্র*হীদের জন্য লোহাগড়া উপজেলার প্রাচীন স্থা*পনা গবে*ষণার দু*র্মূ*ল্য উপাদান। গবেষকদের জন্য গবে*ষণার উপাদান ছাড়াও এসব ঐতিহা*সিক গু*রুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলি সংর*ক্ষিত পু*রাকী*র্তি হিসাবে সংর*ক্ষণ করে সং*স্কা*র করা হলে দেশি বিদেশি প*র্যট*কদের কাছে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।

লোহাগড়ার উপজেলার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদ*র্শনগুলির মধ্যে এখনও যেগুলি টি*কে আছে সেগুলির ম*ধ্যে রায় বাহাদুর যদুনাথ মজুমদার বাড়ির (বর্তমানে লোহাগড়া কলেজ প্রা*ঙ্গনের) আ*ঙ্গিনায় অবস্থিত জো*ড়বাংলা মন্দির, ইতনায় ঔপন্যাসিক নীহার রঞ্জন গু*প্তের পৈ*ত্রিক বস*তবা*ড়ি, মহি*লা জ*মিদার রানী রাশমনির মকিমপুর কা*চারিবা*ড়ি, দী*ঘি ও দো*লমঞ্চ, কো*টাকো*ল সরকার বাড়ির গোবিন্দ দেবের জো*ড়বাংলা মন্দির, প্রখ্যাত সুফি সাধক দেওয়ান শাহ ফয়জুল্লাহ ওরফে পজু দেও*য়ানের মা*জা*র, দ*রগা*হ ও বিরা*ট দী*ঘি, ইতনা ও রাধানগরের মঠ, বৃটিশ বিরোধী আ*ন্দো*লনের নে*তা নী*লমনি পোদ্দারের লোহাগড়াস্থ বাড়ি, শিবপ*ত্নির প*তিভ*ক্তির উদ্দেশে নির্মিত শালনগরের চাকলানবীশ জ*মিদার বাড়ির শিবমন্দির, দোল মন্দির ও জোড়বাংলা মন্দির, ভুষণার রাজা সীতারাম রায়ের প্রধান সেনাপতি মৃন্ময় ঘোষ ওরফে মেনা হা*তির বাড়ির শিব মন্দির ও জো*ড়বাংলা মন্দির অন্যতম।

লোহাগড়া উপজেলার আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পু*রাকী*র্তি ইতিম*ধ্যে বিলু*প্ত হয়ে গেছে। তার মধ্যে ত্রয়োদশ শতাব্দীর আ*ধ্যাত্মি*ক শাসক গাজী-কা*লু চম্পাবতী খ্যা*ত গাজীর মোকামের (স্থানটির বর্তমান নাম নলদী) গাজীর দরগাহ , গোরস্থান ও ঈদগাহ , দেওয়ান শাহ ফয়জুল্লাহর নির্মিত পুরু*ষ ও ম*হিলাদের জন্য পাশাপাশি দু’টি পৃথক মসজিদ অন্যতম।

প্রাচীন এসব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি নির্মা*ণে ব্য*বহৃ*ত ই*ট বা টা*লিগুলি পা*তলা এবং সুদৃশ্য। চু*ন-সু*ড়কির সাহায্যে নির্মিত এসব ভবনের ই*ট ও টা*লিতে আজও নো*না ধরেনি। গাঁ*থু*নিতে রয়েছে বিশেষ বৈ*শিষ্ট। দ*রজা, জানালা,ও খিলানে বিশেষ ধরনের কা*রুকাজ করা। দেওয়া*লগুলি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক পু*রু। মন্দির গাত্রের বিশেষ ন*ক*শা ছাড়াও ভ*বনশী*র্ষে বিভিন্ন প্রা*ণীর মূ*র্তি অথবা ল*তাপা*তা বা ফু*লের ন*ক*শা। কোন কোন মন্দিরের ছা*দে রয়েছে গম্বু*জ যা ম*ঠ সদৃ*শ্য। এসব প্রাচীন স্থা*পনাগুলির অবশি*ষ্টাংশ এখনও সংর*ক্ষণ করা হলে তা দু*র্মু*ল্য প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদে পরিণত হতে পারে। সৌভাগ্যের বিষয় গত কয়েক বছর পূর্বে ঔপ্যন্যাসিক নিহার রঞ্জন গুপ্তের পৈ*ত্রিক বাড়িটি প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদ*প্তর সংর*ক্ষিত পু*রাকী*র্তি হিসাবে ঘোষণা করে অ*ধিগ্রহ*ন করেছে এবং এখানে অস*মা*প্ত কিছু নির্মা*ণ কাজও করা হয়েছে।

লোহাগড়া উপজেলার কা*লনায় মু*ক্তিযো*দ্ধাদের সাথে পাক আ*র্মিদের স*ম্মু*খ যু*দ্ধ স্থানটিও সংর*ক্ষণ করা হলে হতে পারে বিশেষ দ*র্শণীয় স্থান। উল্লেখ্য মহান মুক্তিযু*দ্ধের সময় নড়াইল জেলার একমাত্র কা*লনায় পাক আ*র্মির সাথে মু*ক্তিযো*দ্ধাদের স*ম্মু*খ যু*দ্ধ হয়েছিল। এ যু*দ্ধে পাক আ*র্মি প*রাজি*ত হয় এবং তাদের ৪ জন সৈনি*ক নিহ*ত হয়। লোহাগড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মোল্যার মাঠটিও স্ব*না*মে সংর*ক্ষণ করা হলে ঐতিহ্য সমুন্নত হবে।