নড়াইলে রমজান উপলক্ষ্যে ৩৫জন ডিলারের মধ্যে ৯জন টিসিবি পণ্য উত্তোলন করেছেন

0
31

স্টাফ রিপোর্টার

পবিত্র রমজান উপলক্ষে নড়াইল জেলায় ৩৫ ডিলারের মধ্যে মাত্র ৯ জন ডিলার টিসিবি (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) পণ্য উত্তোলন করেছেন। এখনও পর্যন্ত কালিয়া উপজেলার কোনো ডিলার পণ্য উত্তোলন করেননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু ভোজ্য পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে এবং সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে ২৩ এপ্রিল থেকে টিসিবি পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। জেলায় বর্তমানে ৩৫ জন টিসিবি ডিলার রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫জন, লোহাগড়া উপজেলায় ১৪জন এবং কালিয়ায় রয়েছে ৬জন। এসব ডিলারদের মধ্যে সদরে ৩জন এবং লোহাগড়া উপজেলায় ৬জন ডিলার পণ্য উত্তোলন করেছেন। এবার কেজি প্রতি টিসিবির সয়াবিন তেলের মূল্য ৮৫ টাকা, ছোলার মূল্য ৬০ টাকা, চিনির মূল্য ৪৭টাকা এবং মুশুর ডালের মূল্য ৪৪টাকা এবং খেজুর ১শ৩৫টাকা ধার্য করা হয়েছে। তবে খেজুরের চালান এখনও আসেনি। জানা গেছে, প্রতি বরাদ্দে এক জন ডিলার ১ হাজার লিটার সয়াবিন তেল, ১হাজার কেজি চিনি, ৫০০ কেজি ছোলা এবং ৪০০শ কেজি মুশুর ডাল উত্তোলন করতে পারবেন।

মেসার্স শেখ প্রান্তর এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারি টিসিবির ডিলার শেখ শামসুজ্জামান খোকন বলেন, রমজান উপলক্ষে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে গত ২৫ এপ্রিল থেকে টিসিবি পণ্য বিক্রি শুরু করেছি। খেজুর ছাড়া টিসিবির বাকি পণ্য খুচরা বাজার থেকে মূল্য কম থাকায় এবার টিসিবি পণ্যের চাহিদা থাকবে। তবে কেন ডিলাররা পণ্য তুলছেন না কেন এ প্রশ্নে তিনি বলেন, টিসিবর পণ্যে লাভ কম এবং আনুসঙ্গিক খরচ বেশী। যারা স্থায়ী মুদি ব্যবসায়ী, তাদের পক্ষে টিসিবি পণ্য আনা এবং বিক্রি করা সহজ। আর সারা বছর অন্য কোনো ব্যবসা না করে শুধু ঈদের পূর্বে দুই বার টিসিবি পণ্য এনে খুব একটা লাভ হয়না। ফলে টিসিবির ডিলাররা পণ্য তুলতে চান না।

টিসিবি খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোঃ রবিউল মোর্শেদ বলেন, গত বছর নড়াইল জেলায় মোট ৪০জন ডিলার ছিল। এর মধ্যে গত বছর পণ্য উত্তালন না করাসহ বিভিন্ন কারনে ৫জনের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। বর্তমানে ৩৫জন ডিলার রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৯জন ডিলার টিসিবি পণ্য উত্তোলন করেছেন। জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, দু’এক দিনের মধ্যে টিসিবি ডিলারদের নিয়ে মিটিং হবে। মিটিং-এ ডিলারদের পণ্য উত্তোলনের জন্য বলা হবে। যদি কোনো ডিলার পণ্য উত্তোলন না করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বিপর্যস্ত অর্থনীতি, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবিন্যস্ত বন্দর ইত্যাদির প্রেক্ষাপটে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল জরুরি ভিত্তিতে যোগান দেওয়া ও ন্যায্যমূল্যে ভোক্তাদের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের তীব্র প্রয়োজন দেখা দেয়। এ প্রেক্ষাপটে ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৬৮নং অধ্যাদেশের মাধ্যমে টিসিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতঃপূর্বে ১৯৬৭ সালে গঠিত ট্রেডিং কর্পোরেশন অব পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রের সম্পদ, দায়দেনা ও জনবল নবগঠিত টিসিবি-এর অধীনে ন্যস্ত করা হয়। টিসিবির প্রধান কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে: ১. সরকারের নীতি অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করা; ২. আমদানিকৃত পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় ও বিতরণ করা, পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা ও বাফার স্টক গড়ে তোলা; ৩. বাংলাদেশের প্রচলিত ও অপ্রচলিত পণ্যের বিশ্ববাজার সৃষ্টি ও রপ্তানি করা; ৪. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজার তথ্য ও মূল্য পর্যবেক্ষণ করা এবং ৫. সরকারের নির্দেশ মোতাবেক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব পালন করা।