ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতায় আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের হতাশার হার

671
12

ডেস্ক রিপোর্ট

শুরু আর শেষে বোলিংয়ে ব্যর্থতা এবং পরো ইনিংস জুড়ে ছিলো ব্যাটিংয়ের ব্যর্থতা। ফিল্ডিংও হলো না খুব দারুণ কিছু। তিন বিভাগেই আফগানদের বিপক্ষে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। ফলে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ  হতাশার হারে দিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের। টস হেরে আফগানিস্তান প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৭ রান করে। জবাবে ১২২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। আফগানরা জয় পায় ৪৫ রানে।

 

দেরাদুনে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথমে ব্যাট করার সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগান আফগানিস্তানের দুই ওপেনার উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শেহজাদ ও উসমান গনি। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৪৪ রান যোগ করেন তারা।

শেষ পর্যন্ত দলীয় ৬২ রানে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ২৬ রানে থাকা গনিকে বোল্ড করেন বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেন। অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলে প্রথম উইকেট পতনের পর শেহজাদের সাথে জুটি বাঁধেন অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই। দেখে-শুনে খেলে রানের গতি ধরে রেখেছিলেন তারা। তবে এই জুটিকে বেশি দূর যেতে দেননি সাকিব। ৩৭ বলে ৪০ রান করা শেহজাদকে বিদায় দেন তিনি।

দলীয় ৮৬ রানে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেয়ার পর প্রথমবারের মতো সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে বল তুলে দেন সাকিব। নিজের প্রথম ওভারেই চমক দেখান মাহমুদুল্লাহ। নিজের ওভারের দ্বিতীয় ও পঞ্চম বলে দু’টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ফলে ৯১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এ অবস্থায় রানের গতি কমে যায় তাদের।

কিন্তু পরবর্তীতে শেনওয়ারি ৩টি করে চার ও ছক্কায় ১৮ বলে ৩৬, শফিকুল্লাহ ৩টি ছক্কা ও ১টি চারে বলে ২৪ রান করেন। এ ছাড়া স্টানিকজাই ২৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলেন। শেষদিকে ১টি ছক্কায় ২ বলে ৬ রান তুলে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দেন লেগ-স্পিনার রশিদ খান।

বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আবুল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ, রুবেল হোসেন ও সাকিব।

১৬৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই বিদায় নেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। ডান-হাতি অফ-স্পিনার মুজিব উর রহমানের বলে লেগ বিফোর হন তামিম। তামিমের বিদায়ে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নামেন সাকিব। আরেক ওপেনার লিটন দাসকে নিয়ে রান চাকা ঘুড়াতে থাকেন তিনি। বেশিক্ষণ দলের প্রয়োজনে উইকেটে থাকতে পারেননি সাকিব। ২টি চারে ১৫ বলে ১৫ রান করেন সাকিব।

২১ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন লিটন ও উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। দ্রুত গতিতে রান তুলেন দু’জনে। ফলে ৮ ওভারেই ৬৪ রানে পৌছে যায় বাংলাদেশের স্কোর। কিন্তু এমন সময় বাংলাদেশ শিবিরে দ্বিতীয়বারের মত আঘাত হানেন সাকিবকে শিকার করা আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২০ বলে ৩০ রান কওে বিদায় নেন লিটন। ২৬ বলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৩ রান যোগ করেন লিটন ও মুশফিকুর।

এরপর ১০ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৮০ রান তুলে লড়াইয়ে ছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু ১১তম ওভারে বল হাতে আক্রমনে এসেই বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলে দেন টি-২০র এক নম্বর বোলার রশিদ খান। ঐ ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে মুশফিকুরকে ও পরের ডেলিভারিতে সাব্বির রহমানকে বিদায় দিয়ে হ্যাট্টিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন রশিদ। কিন্তু কাঙ্খিত হ্যাট্টিকের দেখা পাননি রশিদ। মুশফিকুর ২০ ও সাব্বির শুন্য রানে ফিরেন। ফলে ৫ উইকেটে ৭৯ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ।

এমন অবস্থায় পরের দিকে আর কোন ব্যাটসম্যানই বাংলাদেশকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকী থাকতে ১২২ রানে গুটিয়ে যায় টাইগারদের ইনিংস। পরের দিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২৯ ও মোসাদ্দেক হোসেন ১৪ রান করেন। আফগানিস্তানের শাপুর জাদরান ও রশিদ ৩টি করে উইকেট নেন।

আগামী ৫ জুন একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৬৭/৮ (শাহজাদ ৪০, গনি ২৬, শেনওয়রি ৩৬, সাকিব ১/১৯, আবুল হাসান ২/৪০, মাহমুদউল্লাহ ২/১)।

বাংলাদেশ: ১৯ ওভারে ১২২/১০ (লিটন ৩০, মুশফিক ২০, মাহমুদউল্লাহ ২৯; শাপুর ৩/৪০, নবি ২/২০, করিম ১/২৭, রশিদ ৩/১৩)

ফল: আফগানিস্তান ৪৫ রানে জয়ী

ম্যাচ সেরা: রশিদ খান

সিরিজঃ ৩ ম্যাচের সিরিজ আফগানিস্তান ১-০তে এগিয়ে।

Pic: indianexpress