এমপি মাশরাফীর পরিদর্শনের পর নড়াইল সদর হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা কমেছে

1
162

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইল-২ আসনের এমপি ক্রিকেট তারকা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনের পর হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা কমেছে। চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি, সেবা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বেড়েছে বলে জানা গেছে। দালালদের দৌরাত্ম্যও কমেছে। এক সপ্তাহ আগে কার্ডিওলজি, সার্জারি এবং ডেন্টাল সার্জন সদর হাসপাতালে যোগদান করেছেন।

জানা গেছে, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে সদর হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছিল। এখানে অধিকাংশ চিকিৎসকই দায়িত্ব পালন করতেন না। হাসপাতালে দালাল চক্র ছিল যথেষ্ট সক্রিয়। ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা হরহামেশা হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিজিট করতেন। সরকারের সাপ্লাইকৃত ওষুধের যথাযথ ব্যবহার এবং নার্সদের সেবার মানও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। গত ২৫ এপ্রিল নড়াইল-২ আসনের এমপি ক্রিকেটার মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা সদর হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে এসে দেখেন চার চিকিৎসক অনুপস্থিত। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার চিত্র দেখতে পান। পরে ওই দিন রাতে হাসপাতাল এবং জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হয়ে এসব অব্যবস্থাপনা দূর করার কথা বলেন। এর চার দিন পর ২৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সদর হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকা চার চিকিৎসক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আকরাম হোসেন, কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞ শওকত আলী ও রবিউল আলম এবং মেডিকেল অফিসার এএসএম সায়েমকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

মিম খাতুন কিডনির সমস্যা নিয়ে চার দিন আগে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, শুনেছি আগে নার্সরা ভালো ব্যবহার করত না বা সময় মতো আসত না। তারা এখন ভালো ব্যবহার এবং সেবা দিচ্ছেন। এখান থেকে সামান্য কিছু ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান। সবুজ মোল্যা এবং মিজান শেখ শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরজনিত সমস্যা নিয়ে তিন দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা জানান, নার্সদের যে কোনো সময় ডাকলে পাওয়া যাচ্ছে। তারা ভালো ব্যবহার করছেন। প্রতিদিন চিকিৎসক এসে দেখে যাচ্ছেন এবং নার্সরা সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিচ্ছেন।

নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ মীর্জা নজরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের সার্বিক কাজের মান এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। সদর হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সদস্য আলমগীর সিদ্দিকী বলেন, এমপির সদর হাসপাতাল পরিদর্শনের পর হাসপাতালে সার্বিক কাজের গতি এসেছে। একাধিক নার্স বলেন, আমরা আগেও সেবা দিয়েছি। কিন্তু এমপির হাসপাতাল পরিদর্শনের পর কখনও কখনও রাজনৈতিক পরিচয় এবং এমপির কথা বলে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা এর নিরসন চাই।

জানা গেছে, ১০০ শয্যায় উন্নীত এ হাসপাতালে ৩৯টি চিকিৎসকের পদের মধ্যে রয়েছেন ১৬ জন (বরখাস্ত হওয়া চার চিকিৎসক বাদে) চিকিৎসক। এর মধ্যে দু’জন চিকিৎসক সংযুক্তিতে রয়েছেন। সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুস শাকুর বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে শতভাগ হাজিরা রয়েছে, যা আমি এখানে যোগদানের আগে ৭০ ভাগের নিচে ছিল। সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক-নার্স প্রতিদিন গড়ে ইনডোরে প্রায় ২০০ এবং আউটডোরে ৮০০ রোগীর চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।