কালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর দখলের অভিযোগ

0
11
কালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর দখলের অভিযোগ
কালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

একখন্ড জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে নড়াইলের কালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা এস এম মতিয়ার রহমানের বসতঘর দখলসহ মালামাল লুটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বিলধুড়িয়া গ্রামে এ জবর দখলের ঘটনা ঘটে। মতিয়ার ওই গ্রামের মৃত মমিন উদ্দিন শেখের ছেলে। এ বিষয় মতিয়ার রহমান ১০ এপ্রিল কালিয়ার ইউএনওর নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হয়ে এই মুক্তিযোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী রয়েছেন। তার অসুস্থ্যতার সুযোগে প্রতিবেশী মো.শাহাজান শেখের সঙ্গে একখন্ড জমি নিয়ে তার বিরোধ চলছিল। একজন অসহায় ও অসুস্থ্য মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তাকে একটি বীর নিবাস উপহার দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বীর নিবাস হস্তান্তর কারলে তিনি তার বসতঘরটি তালাবদ্ধ করে স্বপ্নের বীর নিবাসে চলে যান। সেই সুযোগটি হাতছাড়া করেনি শাহাজাহান ও তার সহযোগীরা। গত ৩০ মার্চ বিকাল ৫ টার দিকে শাহাজানের নেতৃত্বে ৫/৭ জন দূবৃত্ত মতিয়ারের তালাবদ্ধ বসত ঘরের তালা ভেঙ্গে মুক্তিযোদ্ধার বসতঘরটি দখল করে ঘরে থাকা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুটে নেয়। ঘটনার সাথে ওই দিনই সন্ধ্যায় তিনি পাশর্^বর্তী বড়নাল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসির কাছে দখলদার উচ্ছেদসহ আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ৭১’ জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে পাকহানাদারদের পরাজিত করেছিলাম। আজ আমি অসুস্থ্য ও অসহায়। একটি স্বাধীন দেশে মিথ্যা অজুহাতে বেচা কেনার গল্প তৈরী করে এই ধরনের জবর দখলের প্রতিকার তো দুরের কথা এখন পর্যন্ত অপরাধিদের বিচারের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। এই দু:খ রাখার জায়গা আমার নেই। আমি ন্যায় বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামান করছি।

মো. শাহজাহান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি কোন জবর দখল করেননি। জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকলেও মতিয়ার রহমান বীর নিবাসে যাওয়ার সময় বসতঘরটি তার কাছে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে গিয়েছেন। তাই তিনি ঘরটির দখল নিয়েছেন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার শেখ নজরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, জমির বিরোধটি কয়েকবার মিমাংশার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মিমাংশা করা সম্ভব হয়নি। বসতঘর দখলের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ ঘটনাটিকে তিনি খুবই অন্যায় বলে দাবি করেছেন এবং অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধার বসতঘরটি দখল মুক্ত করাসহ দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন। নইলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের করনীয় ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন।

উপজেলার ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মনিরুল ইসলাম বলেছেন, দুই্ পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা জমির বিরোধটি তিনিসহ অনেকেই মিমাংশার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। তবে মতিয়ার রহমান বীরনিবাসে যাওয়ার আগে তার বসতঘরটি শাহজাহানের কাছে বিক্রি করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তার কাছে কেউ জবর দখলের অভিযোগ করেনি।

উপজেলার বড়নাল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি পরিদর্শক এম এম সেলিম বলেছেন, মোবাইল ফোনে মুক্তিযোদ্ধার বসতঘর দখলের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ছিলেন এবং ক্ষতিগ্রস্তকে কালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কালিয়ার ইউএনও ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি রুনু সাহা বলেছেন, অভিযোগটি পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।