নড়াইলে পুলিশি বাঁধায় ৪দিনেও চিকিৎসা নিতে পারেননি

0
8
নড়াইলের কালিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে দুই নারীকে মারপিটের অভিযোগ, আসবাবপত্র ও চুলা ভাংচুর
নড়াইলের কালিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে দুই নারীকে মারপিটের অভিযোগ, আসবাবপত্র ও চুলা ভাংচুর

স্টাফ রিপোর্টার

পুলিশের বিরুদ্ধে নড়াইলের চাঁদপুর গ্রামের দু’মহিলাকে বেধড়ক মারপিট, বাড়ির অধসবাবপত্র ও চুলা ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সন্ধ্যার পর এ ঘটনার পর আহত দ’ুমহিলা ৪দিনেও পুলিশ বাঁধায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেননি। শুক্রবার বিকেলে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। পরে তাদের নড়াইল শহরের বেসরকারি ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাটিয়ে দেওয়া হয়। মহিলা এখন নিজ বাড়িতেই রয়েছেন।

কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের বর্তমান ইউপি মেম্বর জামাল মোল্যার সমর্থক সবুজ মৃধা জানান, গ্রাম্য কোন্দলের জের ধরে বর্তমান ও সাবেক ইউপি মেম্বর শরিফুল মোল্যা গ্রুপের মধ্যে মঙ্গলবার (১৭মে) ও বৃহস্পতিবার সংঘর্ষ বাঁধে। আমি আসামি হওয়ায় বাড়িতে ছিলাম না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ৩-৪জন পুলিশ আমার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী নাসিমা বেগমকে (৪৫) আমি কোথায় জানতে চেয়ে পুলিশ বেধড়ক মারধর করে। এ সময় আমার বোন রেশমা বেগম (৫০) ঠেকাতে গেলে তাকেও মারধর করে। বাড়ির চেয়ারসহ আসবাবপত্র ও রান্নাঘরের চুলা ভাংচুর করে। এ ঘটনার পর ওইদিন রাত ১২টার দিকে গুরুতর অসুস্থ নারগিসকে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বাড়ি থেকে রওনা হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ পুরুলিয়ার মোড়ে বাঁধা দিয়ে স্থানীয় চাঁচুড়ি বাজারে নিয়ে এক গ্রাম্য ডাক্তারকে দিয়ে চিকিৎসা দেয়। পরদিন শুক্রবার বিকেলে পূনরায় নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসার চেষ্টা করা হলেও পুলিশ হাসপাতাল গেটে বাঁধা প্রদান করে শহরের মল্লিক ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তবে তার স্ত্রীর কোমরের হাড় চটে গেছে বলে তিনি জানান। পুলিশ ভয় দেখিয়ে বলেছে, বিষয়টি কাওকে না জানাতে এবং কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি না হতে। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশের নাম জানেন না বলে জানান।

রোববার (২২মে) দুপুরে ভূক্তভোগি নাসিমা বেগম নিজ বাড়ির বিছানায় শুয়ে কাতর কন্ঠে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ৭/৮জন পুলিশ বাড়িতে এসে স্বামী কোথায় জানতে চায়। তখন জানিনা বললে ২/৩জন পুলিশ বেধড়কভাবে আমাকে ও আমার ননদকে মারধর করে। এরপর কয়েকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েও পারিনি। আমরা ভয়ে চিকিৎসা নিতে পারছি না। এখন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো কিভাবে। তাদের সাথে আমরা পারবো না সেই জন্য কোনো ঝামেলায় যাইনি। এ ব্যাপারে জানতে পুরুলিয়া ইউপি মেম্বর জামাল মোল্যাকে কয়েকবার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে পুরুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মনি ০১৭১৫-০০৮৫০১ বলেন, চাদপুর গ্রামের মারামারির ঘটনা জানি। কিন্তু পুলিশ কর্তৃক গৃহবধূকে মারধরের বিষয়টি জানিনা। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে আপনাকে জানাবো।

কালিয়া থানার ওসি শেখ তাসমীম আলম বলেন, ঘটনার দিন চাঁদপুর গ্রামে পুলিশ টহলের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু পুলিশ কর্তৃক দু’নারীকে মারপিটের বিষয়টির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এছাড়া এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগও করেননি। তৃতীয় পক্ষ কোনো প্রকার সুযোগ নেওয়ার জন্য এ ধরণের কথা বলছে।