বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতিতে ৫০০ কোটি টাকা লোপাট!

11
12
বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতিতে ৫০০ কোটি টাকা লোপাট!
বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতিতে ৫০০ কোটি টাকা লোপাট!

নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার দুর্নীতিতে ইকুইটি এন্ড এন্টারপ্রেনারশিপ-ইইএফ ফান্ডের প্রায় ৫শ কোটি টাকার সন্ধান মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এই তহবিল থেকে অর্থ পাওয়া ৪১টি প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা প্রতিবেদন টেলিভিশন সংবাদ মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, আইন অমান্য করে প্রয়োজনীয় দলিলপত্র ছাড়াই অর্থছাড়ের জন্য সম্প্রতি এক শুনানিতে অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে বলেছে সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিডিবিএল ভবনে আইটি খাতের প্রতিষ্ঠান দ্য ডিকোড লিমিটেড কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা সারওয়ার আলম ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ফান্ড থেকে সাত কোটি ৮১ লাখ টাকা সহায়তা নেন কিন্তু ফেরত দেন মাত্র ২৫ লাখ টাকা।

অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদন উঠে আসে এই টাকা নিতে প্রতিষ্ঠানটি জাল দলিল দেয়াসহ নানা অনিয়ম করে। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক সেসকল অনিয়ম আগ্রাহ্য করেই টাকা দেয়।

২০০৩ সালে পটুয়াখালির বাউফলের আলতাফ ফিশিং লিমিটেডকে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রকল্প মূল্যায়নকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাশজ করে জমির দলিল না দিয়েই প্রতিষ্ঠানটি টাকা নেয়।

২০০৪ সালে রাজধানীর ডেমরার আরকে কমোডিটিজ জমির মূল দলিল জমা না দিয়েই সাড়ে সাত কোটি টাকা সহায়তা নেয়। এখানেও যোগসাজশ খুঁজে পেয়েছে তদন্তকারীরা। আইসিবির সবশেষ হিসাবে, কৃষি ও আইসিটির শতাধিক প্রকল্পে বিনাসুদে ৫শ ২৭ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মাত্র ৩৭ কোটি টাকা ফেরত আসে।

সম্প্রতি ১৯ প্রকল্পের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়েছে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে। টাকা উদ্ধারে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করাসহ তিন দফা নির্দেশনা দিয়েছে কমিটি। কৃষি ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সুদবিহীন অর্থ সহায়তা দিতে ইইএফ ফান্ড গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক এর পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে এই তহবিল হস্তান্তর করা হয় বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবিতে। কিন্তু অনিয়ম অব্যাহত থাকে। ২০১৮ সালে নীতিমালা পরিবর্তন করে তহবিলের নাম পরিবর্তন ও দুই শতাংশ সুদ ধার্য করে সরকার। (সূত্রঃ ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি)

গত ৩০ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ থেকে এক নির্দেশনায় এস্ক্রো পদ্ধতি চালু করা হয়। কিন্তু গ্রাহক পণ্য না পেলেও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া টাকা ফেরত পান না। ফলে গ্রাহকের টাকা আটকে থাকছে। এ পদ্ধতি চালু হওয়ার পর থেকে এরই মধ্যে গ্রাহকের কয়েকশ কোটি টাকা গেটওয়েগুলোতে আটকে রয়েছে। গত ১ নভেম্বর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানে পণ্য কিনতে গিয়ে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। ই-কমার্সে পণ্য অর্ডার করে পাননি এমন গ্রাহকদের অর্থ কেন ফেরত দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে প্রতিকার চাওয়া হয় রিটে। একই সঙ্গে ই-কমার্স পেমেন্টের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত নিয়ম (এস্ক্রো সিস্টেম) সংশোধন করে গ্রাহকের টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেরত পাওয়ার স্থায়ী পদ্ধতি কেন চালু করা হবে না তা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়।

এদিকে অনলাইন প্রতিষ্ঠান কিউকম গ্রাহকগণ তাদের ফেরতযোগ্য অর্থ আদায়ের জন্য আমরণ অনশণ এর হুমকি দিয়েছে। তারা ফস্টার পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে কিউকম থেকে প্রাপ্ত লিস্ট অনুযায়ী রিফান্ড কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়েছে। তারা বলছেন, কিউকম থেকে পাঠানো লিস্টের রিফান্ড দিতে নীতিমালায়ও কোন বাঁধা নেই যেহেতু মার্চেন্ট কনফার্মেশন পাঠিয়ে দিয়েছে।