নড়াইলে একঘরে সেই ৭ পরিবারকে হু’মকি অব্যাহত, ইউপি চেয়ারসহ ১১জনের বিরু’দ্ধে জিডি

0
53
নড়াইলের ৭ পরিবা'রকে একঘো*রে ক'রে রে'খেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান
নড়াইলের ৭ পরিবা'রকে একঘো*রে ক'রে রে'খেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার

সদরের সিঙ্গাশোলপুরে তিন মাসের বেশী একঘরে হওয়া ছাত্রলীগ নেতা সন্ত্রা’সী হা’মলায় আহত আশিকের বাবা ইকরাম শেখ ও তার আত্মীয়স্বজনদের হু’মকি অব্যাহত রয়েছে। ইকরামের ৬টি জ্ঞাতি পরিবার ও প্রতিবেশী যারাই সম্পর্ক রাখছে তাদেরকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি ইকরামের শ্যালকের ছেলে রেঞ্জার শেখ (৩৫) এসব হুমকির কারনে গত ডিসেম্বর মাসে চেয়ারম্যানের ২জন লোকের বিরু’দ্ধে সদর থানায় একটি জিডি করলেও পরে স্থানীয় ইউপিচেয়ারম্যান উজ্জল শেখ তাকে বাড়িতে ডেকে নেওয়ার পর ভ’য়ে জিডি তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে। সর্বশেষ আশিককে জখ’মের মামলায় ইকরাম ও তার স্ত্রী আদালতে গেলে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন জামিনে ছাড়া পেয়ে আদালত চত্বরে গা’লিগা’লাজ করেছে, পূনরায় মারধর ও দেখে নেওয়ার হু’মকি দিয়েছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কারনে ইকরাম শেখ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন।

ইকরাম শেখ জানান, গত ১২ ডিসেম্বর আশিককে জখমের মামলায় সোমবার (১১ জানুয়ারী) আমরা আদালতে যাই। প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আদালতে জামিন পেয়ে আদালত চত্বরে এবং বাদি পক্ষের অ্যাডভোকেট বসিরুল হকের চেম্বারের মধ্যে আমাদের অ’কথ্যভাষায় গা’লিগা’লাজ করে এবং দেখে নেওয়ার হু’মকি দেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই দিন সদর থানায় একটি জিডি করি।

ইকরাম শেখের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, চেয়ারম্যানের হুমকির কারনে আত্মীয় স্বজনরা আমাদের বাড়িতে আসা বাদ দিয়েছে। প্রকাশ্যে কথাও বলছে না। রাতের আঁধারে কেউ কেউ গোপনে এসে দেখা করে। কেউ মিশলে বা কথা বললে চেয়ারম্যান উজ্জল ও তার লোকজন তাদের হু’মকিধম’কি দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইকরাম শেখের এক আত্মীয় জানান, আশিককে জ’খমের পর তার খালাতো ভাই রেঞ্জার শেখ ও তার স্ত্রী হিরা বেগম আশিকদের বি’পদে-আ’পদে খোঁজ-খবর ও সাহায্য সহযোগিতা করায় রেঞ্জারকে চেয়ারম্যান পক্ষের রবিউল শেখ(২৭) ও রাজু বিশ্বাস(২৪) হ’ত্যার হুম’কি দেয়। এ ঘটনায় গত ডিসেম্বর মাসে সদর থানায় একটি জিডি করে। পরে চেয়ারম্যান তাকে বাড়িতে নিয়ে শারী’রিকভাবে নির্যাতন করলে ভয়ে জিডি তুলে নিতে বাধ্য হয়।

সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিযুষ বালা, সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন শেখ বলেন, আমাদের কিছু করার নেই। শুনেছি উজ্জল শেখ আগে যুবদলের সাথে যুক্ত ছিল। সে কিভাবে সেচ্ছাসেবকলীগে ঢুকেছে তা বলতে পারব না। সে তার মতো করে রাজনীতি করে। আমরা চেয়ারম্যানকে বিষয়টির মিমাংসার কথা বললে সে বলেছে এর মধ্যে আসবেন না। এ ব্যাপারে প্রশাসনও নিরব।

আশিকের বড়ো ভাই ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরিরত তরিকুল ইসলাম জানান, তার ছোট ভাই আশিকুল ইসলাম সদর উপজেলা সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তার জন্য কাল হয়েছে। সে চেয়ারম্যান উজ্জলের পক্ষে না যাওয়ায় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে স’ন্ত্রাসী দিয়ে কয়েকবার তাকে মা’রার চেষ্টা করে।

এ কারনে গত বছরের ১অক্টোবর আশিক চেয়ারম্যানের বিরু’দ্ধে হ’ত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগ এনে নড়াইল পুলিশ সুপার বরাবর একটি দরখাস্ত করে। বিষয়টি চেয়ারম্যা জানার পরদিন ২অক্টোবর খলিশাখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক গ্রাম্য সভা ডেকে তার পরিবারকে একঘোরে করে। এর দু’মাস পর ১০ ডিসেম্বর স্থানীয় আগদিয়ার চর বাজার থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন কু’পিয়ে গু’রুতর জ’খম করে।

আশিক এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভাইকে মারার পর এখন আমাদের সবাইকে হুম’কি দিচ্ছে। আমি ও আমার ভাই চেয়ারম্যানের ভ’য়ে মা-বাবাকেও একটু দেখতে যেতে পারছিনা।
বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই নাজির বলেন, মামলা আদালতের বিষয়। মামলা তার নিজস্ব গতিতে চলবে। চেয়ারম্যানকে কোনো ঝামেলা ফ্যা’সাদ করতে নিষেধ করেছি। এখন এসব ব্যাপারে এলাকার লোক যদি কোনো কথা না বলে তাহলে আমরা কি করতে পারি।

সদর থানার ওসি মোঃ ইলিয়াছ হোসেন বলেন, আপনি বাদি পক্ষকে আমার কাছে আসতে বলেন, তারপর দেখছি। এ ব্যাপারে সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি উজ্জল শেখ বলেন, রেঞ্জারকে কোনো ভয়, হু’মকি বা মা’রধর করা হয়নি। সে নিজ থেকেই জিডি প্রত্যাহার করেছে। আদালত চত্বওে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি জিডি করার মতো। সামনে ইউপি নির্বাচন, সেজন্য এসব তার বিরুদ্ধে একটি ষ’ড়যন্ত্র। নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ-খবর নিয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি।