নড়াইলের কালিয়ায় বে-আইনিভাবে ইট ভাটা ভাং’চু’রের প্রতিবাদে মানববন্ধন

0
35
নড়াইলের কালিয়ায় বে-আইনিভাবে ইট ভাটা ভাং'চু'রের প্রতিবাদে মানববন্ধন
নড়াইলের কালিয়ায় বে-আইনিভাবে ইট ভাটা ভাং'চু'রের প্রতিবাদে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার

পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বড়নালের বিলবাদুড়িয়া গ্রামে অবস্থিত মেসার্স সস্তী এন্টার প্রাইজ ব্রিক, হাওয়া জিকঝাক, চিপ্নী ক্লিনসহ যাবতীয় মালামাল বে’-আইনিভাবে ভাং*চু*রের প্রতিবা*দে এবং বিচারের দা*বিতে মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার বেলা সাড়ে ১০টায় নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বড়নাল ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের বিলদুড়িয়ায় গ্রামে মেসার্স সস্তী এন্টার প্রাইজের ইট ভাটা চত্বরে এ মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেসার্স সস্তী এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ফজিলাতুন্নেছা জানান, আমার মেসার্স সস্তী ব্রিক ফিল্টি ১২০ ফিট চিমনি বিশিষ্ট ভাটা ছিলো। গত ২২/০৭/২০২০ তারিখ পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব আহমেদ জিয়াউর রহমান ও পরিবেশ অধিদপ্তর, যশোর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক জনাব মোঃ কামরুজ্জামান সরকার এর যৌথ অভিযানে বে’-আইনি ভাবে আমার এই ভাটা ভে*ঙ্গে দেয়। আমি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সরকার ঘোষিত নীতিমালায় আমি ০২/০১/২০১৮ ইংরেজি তারিখে মেসার্স সস্তি ফিল্টি ঝিকঝাক ভাটায় রূপান্তর করি এবং ১৫/১০/২০১৮ ইংরেজি তারিখে পরিবেশ গত ছাড়পত্রের জন্য যশোর জেলা কার্যলয়ের আবেদন করি এবং আমার আবেদনটি গৃহিত হয়। কিন্তু সরকারি প্রক্রিয়াগত জটি’লতার কারণে আমার ইট ভাটা অনুকুলে কোন ছাড়পত্র এই দীর্ঘ সময়েও আমাকে হস্তান্তর করা হয় নাই। আমি জেনেছি কিছু স্বা*র্থন্বেষী মহল আমার ভাটার বিরু*দ্ধে অ*নৈতিক ভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরে দরখাস্থ করেছে। কিছু অ*সুস্থ চিন্তাধারার লোক তাদের অসৎ উদ্দের্শ্য চরিতার্থ করার জন্য হঠাৎ এই অভিযান করেছে বলে আমার বিশ্বাস। পরিবেশ অধিদপ্তর এর নিয়ম এবং সার্বিক মান অ*ক্ষুন্ন রেখেই আমার ভাটার সকল কাঠামো তৈরি ছিল। কিন্তু আবাসিক এলাকা এবং মাদ্রাসার নিকটবর্তী উল্লেখ করে আমার কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই আমার ভাটা ভে*ঙ্গে দেয়া হয়।

তিনি আরো জানান, সরকারি প্রক্রিয়ার কোন স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করার আগে মালিক পক্ষকে অবহিত করার নিয়ম থাকলেও আমাকে কেন নোটিশ দেয়া হয়নি সে সম্পর্কে প্রশাসনের কাছে আমার বিনয়ী জিজ্ঞাসা রইলো। আকস্মিক এই অভিযানে আমার প্রায় ৭০/৮০ লক্ষ টাকার ক্ষ*য়ক্ষ*তি হয়েছে। যা আমার জন্য রীতিমত খুবই সমস্যার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থের বেশির ভাগ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়েই চলছিল।

তিনি আরো বলেন, আপনাদের অবগতির জন্য আরও জানাতে চাই, পরিবেশগত সকল প্রক্রিয়া এবং সরকার অনুমোদিত ঝিকঝাক ভাটার সকল প্রক্রিয়াই আমার ছিলো। আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে আমার তিন দফা দাবী’ ১। সরকার অনুমোদিত ঝিকঝাক ভাটার সকল কাগজপত্র পরিবেশ অধিদপ্তরে গৃহীত হবার পরেও বিনানোটিশে কেন প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেশি স্থাপনা ভা*ঙ্গা হলো এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করার দাবী।

২। কালিয়া উপজেলায় সরাসরি অ*বৈধ প্রক্রিয়ায় নির্মিত ভাটার বিরু*দ্ধে অভিযোগ থাকা এবং পরিবেশের ভারসাম্য ন*ষ্ট করার পরেও সে দিকে প্রসাশনের প্রক্রিয়া এবং অবস্থান জানার দাবী। পাশাপাশি একক ভাবে কেন আমার এস এম বি ব্রিকস এর উপর অ*নৈতিক অভিযান সে প্রক্রিয়ার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবী। ৩। লাইসেন্স সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র থাকা সত্বেও কেন তা মূল্যায়ন হয়নি ।

এ সময় বক্তব্যে বড়নাল ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, অত্র এলাকায় এ ভাটা ছাড়া বৈধ কোন ভাটা নাই এবং এই ভাটার জন্য এই এলাকায় কয়েক গ্রামের মানুষের উপকার হয়। নোটিশ ছাড়া ভাটা ভা*ঙ্গার তীব্র নি*ন্দা জানাই। চন্ডিনগর গ্রামের জহুর গাজী বলেন, ভাটা ভাং*চু*রের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম তখন কাগজপত্র দেখাতে গেলে কর্মকর্তারা বলেন কাগজপত্র খালে ভিজিয়ে রাখো।

বিলদুড়িয়া গ্রামের ঈমান শেখ বলেন, ভাটা ভা*ঙ্গা চলাকালীন সময়ে ১২/১৪ বার কর্মকর্তাদের ফোন বাজছিল কিন্ত ফোন রিসিভ না করে কে*টে দিচ্ছিল। মেসার্স সস্তী এন্টার প্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ফজিলাতুন্নেছার ছেলে বড়নাল ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার মা শারী*রিক প্রতিব*ন্ধী কারণে ভাটা দেখাশুনার করার দ্বায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়। ৫-৬ বছর ধরে তিল তিল করে এ ইটভাটার ব্যবসা গড়ে তুলেছি। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু পরিচালনা করছি। তারপরেও কেন কোন নোটিশ ছাড়া ভা*ঙ্গা হলো এটা আপনাদের মাধ্যমে বিচার চাই। তিনি আরো বলেন পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর তাদের ওয়েব সাইটে যে স্ট্যাটাস দিছে তাতে লিখেছে মেসার্স হৃদয় ব্রিকস নামক ইটভাটাটির চিমনী ও কিলন সম্পূর্ণ ভে*ঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্ত বাস্তবে আমাদের মেসার্স সস্তী এন্টার প্রাইজ ব্রিক, হাওয়া জিকঝাক, চিপ্নী ক্লিন সহ যাবতীয় মালামাল ভাং*চু*র করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে, বড়নাল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এস এম মাহবুবুর রহমান, বিলদুড়িয়া গ্রামের সাইদুর রহমান, কুঞ্জপুর গ্রামের মোঃ কামরুজ্জামান, মা*থাভা*ঙ্গা গ্রামের আবদুল লস্কর, রাজাপুর গ্রামের আলমগীর মোল্যা, ফিলফানগর গ্রামের রসুল মল্লিকসহ অনেকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।