পাঠাও চালক মিলন হ*ত্যার অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা ছিল খুবই কঠিন

0
52

ডেস্ক/এসএস

চাঞ্চল্যকর পাঠাও চালক মিলন হ*ত্যার অনুসন্ধানে প্রকৃত খুনিকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গত রবিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকা থেকে নুর উদ্দিন ওরফে সুমন (৩৮) নামে ছি*নতাইকারীচক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মিলন হ*ত্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

জানা গিয়েছে রাইড শেয়ারিং চালক মিলন মাত্র ৫০ টাকায় ভাড়ার চুক্তিতে নুর উদ্দিন ওরফে সুমন নামের একজনকে তাঁর মোটরসাইকেলে তুলেছিলেন। তাকে গুলিস্তানে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। তবে গন্তব্যে যাওয়ার আগেই মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিতে মিলনকে গ*লা কেটে হ*ত্যা করে সুমন।

আটকের সময় সুমনের কাছ থেকে নিহত মিলনের ব্যবহৃত একটি স্যামসাং জে-৫ মোবাইল ফোনসেট, দুটি হেলমেট ও ডায়াং ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করে বিস্তারিত বর্ণনা দেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন।

এই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৬ আগস্ট রাত আনুমানিক ৩টার দিকে পাঠাও চালক মিলন একজন যাত্রীকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় নামিয়ে দেন। এরপর মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে ওঠার সময় আবুল হোটেলের ঢালে গ্রেপ্তার হওয়া সুমন তাঁকে থামিয়ে গুলিস্তান যাবে বলে ৫০ টাকায় ভাড়া ঠিক করে। ফ্লাইওভারের সবচেয়ে ওপরের ধাপে পৌঁছালে মোটরসাইকেল থামাতে বলে সুমন। বাইক থামানোর পর সুমন জানায় এবার সে নিজে মোটরসাইকেল চালাবে। এতে মিলন রাজি না হয়ে বলে, ‘আপনাকে আমি কেন মোটরসাইকেল চালাতে দেব?’ এভাবে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সুযোগ বুঝে সুমন অ্যান্টিকাটার দিয়ে মিলনের গলায় আ*ঘাত করে তাঁকে ফ্লাইওভারে ফেলে রেখে মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিলনকে হ*ত্যার দায় স্বীকার করে সুমন ডিবিকে জানিয়েছে, মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিতেই মিলনকে সে ছুরি মেরেছিল। এর আগে সে যাত্রীবেশে মিলনের গাড়িতে ওঠে।

সুমনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন বলেন, মিলন হ*ত্যার ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় দায়ের করা মামলার ছায়া তদন্তের একপর্যায়ে সুমনের সন্ধান পায় ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ ডিবি। তবে ঘটনাস্থলে ছিল না কোনো সিসি ক্যামেরা, কেউ ঘটনা দেখেনি ও ঘটনাটি রাতের নির্জনে হওয়ায় এমন ক্লুলেস কেসে অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করাটা ছিল খুবই কঠিন। কিন্তু ডিবি পুলিশ সেই কঠিন কাজটি সফলতার সঙ্গে করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত রবিবার দিবাগত গভীর রাতে শাহজাহানপুর থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি পুলিশ আরো জানায়, পাঠাও চালক মিলনকে মূলত একজন ছু*রিকাঘাত করলেও এর পেছনে আরো কয়েকজন জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।

তিনি সুমনের বিষয়ে জানান, ৩৮ বছর বয়সী সুমন দীর্ঘদিন ধরেই ছিন*তাইকারীচক্রের সদস্য। তার বিরুদ্ধে মতিঝিলে একটি ছি*নতাই ঘটনায় জড়িত থাকার মামলা রয়েছে। এরা সুযোগমতো গাড়ি ছিনতাই করে আসছিল। এই চক্রে আরো অনেক সদস্য আছে।

সবশেষে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) নগরবাসীকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, অ্যাপসের মাধ্যমে যাত্রী বহন নিরাপদ। চুক্তিতে না গিয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে রাইড শেয়ার করা উত্তম। সে জন্য সব নগরবাসীকে সচেতন হয়ে পথ চলতে হবে। খুন হওয়ার আগে পাঠাও চালক মিলন কোনো অ্যাপস ব্যবহার করেননি।