শিশু রোকসানা নির্যাতনে গৃহকর্তী সোনিয়াকে জেলে প্রেরণ করেছে আদালত

5
24

স্টাফ রিপোর্টার

৮ মাস ধরে ঢাকার একটি বাসাবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়ে নড়াইলের ১০বছরের শিশু রোকসানা ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। এদিকে পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে মঙ্গলবার (১১সেপ্টেম্বর) দুপুরে নড়াইলের লোহাগড়া আমলী আদালতে হাজিরা সেচ্ছায় হাজির হন গৃহকর্তী সোনিয়া। জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে লোহাগড়া আমলী আদালতের বিচারক মোঃ জাহিদ হাসান।

যৌন নিপিড়ন থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৮মাস যাবত হেন নির্যাতন নেই, যা হয়নি শিশুটির উপর। মৃত্যু পথযাত্রী শিশুটি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের পেড্রিয়াট্রিক আই সি ইউ তে চিকিৎসাধীন। তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে তা টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন সময় শিশু রোকসানা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা।

সারা শরীরের আঘাতের কালশিটে দাগ, দীর্ঘদিনের লাগাতার নির্যাতনের চিহ্ন, দগদগে ক্ষতও রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। নিস্তেজ কঙ্কালসার দেহটি হাসপাতালের বিছানার সাথে লেপ্টে আছে। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বাতাস, খাদ্য গ্রহনের শক্তিটুকু নিঃশেষ হয়ে গেছে, কৃত্তিম উপায়ে চলছে শ্বাস।

আট মাস আগে ঢাকার ওয়ারী এলাকার ইলিয়াস হোসেন পলাশ নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে (সেলিম টাওয়ার-বাড়ি-৪৫, লালচান রোড) গৃহকর্মীর কাজ নেয় লোহাগড়া উপজেলার বাহিরপাড়া গ্রামের শিশু রোকসানা। সেখানে ইলিয়াস হোসেনের স্ত্রী সোনিয়া, তার ভাই ইব্রাহিম শিশুটির উপর নির্যাতন চালায়।

দীর্ঘ নির্যাতনের এক পর্যায়ে রোকসানা মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে তাকে ঢাকা সেন্ট্রল হাসপাতালে ভর্তি করে পাষন্ড পরিবারটি। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে স্বজনদের খবর দিয়ে ঢাকায় নিয়ে ১৭ আগষ্ট রাতে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় রোকসানা কে। মরনাপন্ন রোকসানাকে ১৯আগষ্ট নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে অবস্থার অবনতি হলে ২৪ আগষ্ট তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। এ ঘটনার বিচার চেয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে।