পুলিশের মারধরে আসামির অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হাসপাতালে!

0
8
পুলিশের মারধরে আসামির অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হাসপাতালে!
পুলিশের মারধরে আসামির অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হাসপাতালে!

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

গরু চুরির মামলায় এফআইআর ভুক্ত আসামি ধরতে অভিযান চালান পুলিশ। এ সময় স্ত্রী স্বামীর গ্রেফতার এড়াতে পুলিশের হাতে পায়ে ধরেও শেষ রক্ষা হয়নি। উপরুন্ত পুলিশের ধাক্কা, লাথি ও লাঠির আঘাতে লুটিয়ে পড়ে অন্তঃস্বত্বা স্ত্রী। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের শিবপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামে। আহত ওই নারী হচ্ছেন ওই গ্রামের আবুল হাসেম রাজিবের (২২) স্ত্রী। গত প্রায় চার বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তিনি দ্বিতীয়বার সন্তান সম্ভবা।

গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য নবী হোসেন জানান, কয়েকদিন আগে এলাকা থেকে ছয়টি গরু চুরি হয়। এর মধ্যে গরু উদ্ধারে এলাকায় বেশ কয়েকটি সালিসও হয়েছে। কোনো ফলাফল না হওয়ায় পরে বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়। এই গরু চুরির মামলায় আবুল হাসেম রাজিবকে চার নাম্বার সন্দেজনক আসামি করা হয়। এ অবস্থায় গত বেশ কয়েকদিন ধরে অভিযুক্ত রাজিব শ্বশুড় বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এটা জানতে পেরে মামলার বাদী পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে রাজিবকে ধরতে ঘরে প্রবেশ করে।

রাজিবের শাশুড়ি জাহানারা বেগম জানান, ওই সময় তিনি নিজের ঘরে ছিলেন। পরে এগিয়ে গিয়ে দেখেন থানার একজন দারোগা তাঁর মেয়ের স্বামী রাজিবকে ব্যাপক মারধর করতে থাকলে অন্তঃস্বত্বা মেয়ে এগিয়ে গিয়ে দারোগার পায়ে ধরে স্বামীকে না মারতে অনুরোধ করেন। কিন্তু দারোগা কোনো কথা না শোনে মেয়ে রিপা আক্তার (২০)কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং পরে তল পেঠে লাথি মারে। এ সময় জোরে চিৎকার দিয়ে মেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত আহত রিপা আক্তার জানান, সাত পুলিশ যখন তাঁর স্বামীকে ধরতে ঘরে প্রবেশ করেন তখন তিনি ভাত খাচ্ছিলেন। এ অবস্থাতেই স্বামীকে টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করার চেষ্টা করে। তখন তিনি অনুরোধ করে বলেন খাওয়াটা শেষ করে নিতে। কিন্তু এমদাদ নামে দারোগা তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পরপর দুটি লাথি মারে। এতেই কান্ত হয়নি। হাতে থাকা লাঠি দিয়েও তাঁর মাথা ও শরীরে তিন থেকে চারটি আঘাত করেন ওই পুলিশ সদস্য। এ সময় পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলে শ্বশুড় আমাকে গৌরীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। আহত রিপার শ্বশুড় আবুল বাসার লিটন জানান, স্থানীয় হাসপাতাল থেকে বিকেলে রিপাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।

এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার উপপরিদর্শক মো. এমদাদুল হক আসামি ধরার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, গরু চুরির মামলায় রাজিবকে ধরার সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন পরিবারের লোকজন। এ সময় দা নিয়ে তেড়ে আসেন আসামি রাজিবের শাশুড়ি। অন্যদিকে স্বামীকে রক্ষা করতে স্ত্রী রিপা এগিয়ে আসলে পা পিছলে পড়ে যায়। তাকে কোনো মারধর করা হয়নি।