সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশের করণীয়

0
35
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশের করণীয়
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশের করণীয়

মীর আব্দুল গণি

বর্তমান যুগে যানবাহণ ব্যবহার জীবন জীবিকার অংশ বিশেষ হলেও বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা মানুষের জান মালের অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়েছে। এবং মর্মান্তিক বিষয় হলো বাংলাদেশে দুর্ঘটনা কবলিত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতি পূরণের তেমন কোনই ব্যবস্থা নাই।

ফলে দেখা যায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে বা পঙ্গু হয়ে গেলে ঐ পরিবারটি মানবেতর জীবনে নিপতিত হয়। পরিবার বা ব্যক্তিটির দেখার কেউ থাকে না। সভ্য জগতে যাহা অত্যান্ত অমানবিক। অথচ বিশ্বের সকল সভ্য, উন্নত দেশেই যানবাহনের জন্য রয়েছে বাধ্যতামূলক গাড়ীবীমার বিশেষ বীমাব্যস্থা। যে বীমাব্যবস্থার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ীর মালিকও যথাযত ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকেন। এবং ঐ বীমাব্যবস্থার কারণেই চালকও রাস্তায় গাড়ী চালাতে সংযত হতে বাধ্য থাকেন। সাধারণ মানুষের জীবনের নুন্যতম নিশ্চয়তা বিধানের জন্য এ যুগে বাধ্যতামূলক গাড়ীবীমার বিকল্প নাই।

বাংলাদেশে গাড়ীবীমা সম্পর্কে যেটা শুনেছি সেটা হলো থার্ডপার্টি ইন্স্যুরেন্স বা তৃতীয়পক্ষ বীমাব্যবস্থা। কতিপয় ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতায় উক্ত বীমাব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁদের অনিহাই স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি। অনিহার কারণ ক্ষতিপূরণ পেতে নাকি বেশ ভুগতে হয়। ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবার জন্য যে ব্যবস্থা সেটায় অবশ্যই স্বচ্ছতা থাকতে হবে। ভুক্তভোগী যাতে কোনরূপ হয়রানির সন্মুখীন না হন কর্তৃপক্ষের উচিত সেদিকে যথাযত দৃষ্টি দেয়া।

যে কোনও উন্নত দেশের বাধ্যতামূলক গাড়ীবীমাব্যস্থা লঙ্ক্য করলেই বুঝা যায় যানবাহণ নিয়ন্ত্রণে ও ক্ষতিগ্রস্তকে ক্ষতিপূরণে কি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জার্মানির গাড়ীবীমার বৈশিষ্ট্য অতিসংক্ষেপে এখানে তুলে ধরলে বীমাব্যবস্থার কার্যকারিতা বুঝতে সহজ হবে। গাড়ীবীমার কার্যকারিতা সরাসরি চালক-মালিক ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে। গাড়ী বীমা‘কে জার্মান ভাষায় বলা হয়- (Kraft fahrzeug Haft pflicht versicherung ক্রাফ্ট ফারসউগ হাফ্ট ফ্লিষ্ট ফারসিসারং।)

বাংলায় বাধ্যতা মূলক গাড়ী-বীমা বলে উল্লেখ করতে পারি। ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও জার্মানিতে গাড়ীবীমা ব্যতিত কেউ গাড়ী চালাবার অনুমতি পান না। অর্থাৎ জার্মানিতে গাড়ী চালাতে হলে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ীবীমা অবশ্যই থাকতে হবে। জার্মানির গাড়ীবীমার প্রয়োগ-প্রক্রিয়া ও বীমাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলেই ক্ষতি পুরণ দেওয়ার ও চালক নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া উভয়ই বুঝতে সহজ হবে।

‘‘বাধ্যতা-মূলক গাড়ী-বীমার বৈশিষ্ট্য‘‘ ১
ক) বীমা-অর্থের পরিমাণ- ড্রাইভিং লাইসেন্স যার নতুন- মনে করি ১ম বৎসর ২২৫‍ পার্সেন্ট। নতুন লাইসেন্স ধারীর জন্য পরীক্ষা মূলক সময় দুই বছর। ঐ সময়ে কোন রূপ দুর্ঘটনা ঘটালে তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। বাতিল হলে পুনরায় লাইসেন্স পেতে তাকে বহু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরীক্ষা দিতে হয় যাহা বেশ ব্যয় বহুল।

(ড্রাইভিং লাইসেন্স নতুন ২২৫‍ পার্সেন্ট-এ মনে করি বাৎসরিক বীমার ২৫,০০০ টাকা। চালক ইচ্ছা করলে তার বীমার বাৎসরিক মোট টাকা এক কিস্তিতে বা ষান্মাসি বা ত্রয়মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারেন।)

খ) দুর্ঘটনা মুক্ত থাকলে একটা নির্দিষ্ট হারে প্রতি বছর তার বীমার টাকার পরিমান তথা পার্সেন্ট কমতে থাকে। এবং শেষাবধি হয়তো সর্ব নিম্নে ৩৭ পার্সেন্ট, বছরে হয়তো ৫০০০ বা ৬০০০ টাকা দিতে হয়।
(বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বীমার পরিমাণ ও পার্সেন্ট বীমাসংস্থায় অভিজ্ঞ কয়েকজন ব্যক্তির মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে।)

চালককে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গাড়ীবীমার ভূমিকা-
কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটালে দুর্ঘটনার কারণ বা দোষী হলে বীমার আর্থিক পরিমাণ তার বর্তমান পার্সেন্ট থেকে বেড়ে যায়। সে জন্য নিজের ভুলের কারণে আর্থিক ক্ষতি গ্রস্ত যাতে না হতে হয় সেই কারণে চালক সর্বদা সতর্ক থাকেন ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও কমে যায়।

অপর দিকে- দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তকে (গাড়ী, ব্যক্তি বা অন্য যে সম্পদই হউক) আর্থিক ক্ষতিপূরণ দুর্ঘটনা সংঘটনকারীর বীমা সংস্থা দিয়ে থাকে তা সে যে পরিমাণ অর্থই হউক। অবশ্য প্রতিটি বীমা সংস্থার নীতিমালায় স্পষ্ট উল্লেখ থাকে কি ধরণের এবং কি ক্ষতি সাধিত হলে কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি পূরণ দিবে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখা যায় সর্বোচ্চ পরিমাণ। গাড়ীর বা অন্য কোন সম্পদের ক্ষেত্রে নির্ভর করে মেরামত খরচ বা তার বর্তমান মূল্যের উপর।

জার্মানির গাড়ীবীমাসংস্থা চার থেকে আট সপ্তাহের মধ্যেই ক্ষতিগ্রহস্তকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। গাড়ী বীমার উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করলে দেখা যায়-
বীমার পার্সেন্ট বৃদ্ধি হলে চালক আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে কারণে গাড়ী চালাতে সে যতেষ্ট সতর্কতা অবলম্বণ করে থাকেন। অর্থাৎ গাড়ী বীমার পার্সেন্ট-এর কারনে চালক নিজেকে নিজেই নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট থাকেন। ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমে যায়।

যাঁরা গাড়ী ব্যবহার করেন বিলাসিতা বা ব্যবসার জন্য, ভোগ বা লাভ তাঁদের। তাদের দ্বারা সাধিত কোন ক্ষতির দায়ভার তাঁদেরই নিতে হবে। চালক-মালিকের অর্থে গড়ে তুলা- উক্ত বীমা সংস্থা তাদের সেই দায়ভার নিয়ে থাকে। এবং উভয় পক্ষই বিপর্যায় হতে রক্ষা পেয়ে থাকেন।

গাড়ীবীমাসংস্থার উদ্দেশ্য- ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতিপূরণের যৌক্তিক সমাধাণ কল্পেই জার্মানির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায়- বাধ্যতা মূলক গাড়ী-বীমা সংস্থা গড়ে তুলা হয়েছে।

বিষয়টি একটি উদাহরণের সাহায্যে তুলে ধরা যায়-

যেমন- গ ও ঘ দুই জন চালক। মনে করি গ এর ভুলে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং ঘ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মনে করি ক্ষতির পরিমাণ বিপুল অর্থ। অপর দিকে ঘ তার সর্ব্বস্ব হাড়ায়েছে। উক্ত ক্ষেত্রে অস্তিত্বের সঙ্কট। গাড়ী বীমা উক্ত সঙ্কট থেকে উভয়কে যে ভাবে রক্ষা করে থাকে সেটা হলো- ঘ-এর ক্ষতির যথাযত পরিমাণ অর্থ বীমা সংস্থা দিয়ে থাকে। এবং গ এর ভুলের কারণে তার বীমার পার্সেন্ট নির্দিষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। উক্ত ক্ষেত্রে চালক, মালিক ও ক্ষতিগ্রস্ত সভার জন্যই গাড়ীবীমার ভূমিকা মঙ্গল জনক।

প্রশ্ন বাংলাদেশে আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য করণীয় কি? সমাধানের সহজ উপায় হলো সমস্যাটি সমাধানে যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের প্রক্রিয়াকে-অনুকরণ বা অনুসরণ করা। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জাতিই যেটা করে থাকে। যেমন অনেক রোগ আছে যার নিরাময়ের ঔষুধ কোনও এক জাতি মানুষ আবিষ্কার করেছেন কিন্তু বিশ্বের সকল জাতি মানুষই ঐ ঔষুধ আরোগ্য লাভের জন্য ব্যবহার করছে। যেমন কোভিড ১৯ এর টিকা। ঔষধটি গ্রহণ করাকে আমরা বলবো- সমস্যা সমাধাণের ব্যবস্থা গ্রহণ বা অনুসরণ করা। (কেউ অন্যের আবিষ্কৃত টিকা গ্রহণ না করে যার যার মত আবিষ্কারের অপেক্ষায় থাকলে কি হতে পারে? সব জাতিরই কি সেই সক্ষমতা আছে? দীর্ঘ কাল অপেক্ষায় থাকলে অস্তিত্বের সংকটে অবশ্যই পরতে হবে।)

বর্তমান বিশ্বে অনেক সমস্যার সমাধাণ ইতিপূর্বেই আবিষ্কৃত হয়েছে এবং অনেকেই অনুসরণ করছে।
যে সমস্যাসমূহের সমাধাণ ইতিপূর্বেই আবিষ্কৃত হয়েছে সেই একইরূপ সমস্যার সমাধান নিজেরা অনুসন্ধান না করে কোনও দেশের গৃহিত ব্যবস্থা অনুসরণ করলে অতি সহজ ও সঠিক হয়। যানবাহণ ব্যবহারে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সে সমস্যার যৌক্তিক সমাধানও ইতিপূর্বেই আবিষ্কার হয়েছে। আমরা যানবাহণ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা অনুসরণ করতে আগ্রহী হলে- জার্মানির গৃহিত যানবাহণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অনুসরণ করাই হবে অতি উত্তম। (সর্বোত্তম বলেই বিশ্বে অধিকাংশ দেশ অনুসরণ করে থাকে।)

গাড়ী বীমা সংস্থার গঠণ প্রক্রিয়া-

জার্মানিসহ উন্নত প্রতিটি দেশে তাদের একাধিক গাড়ী বীমা সংস্থা রয়েছে। বীমা সংস্থাগুলি সরকারের অনুমোদিত নীতিমালার ভিত্তিতেই গড়ে উঠে (আমাদের দেশে যেমন জীবন বীমা সংস্থা রয়েছে।) জার্মানিতে বহু গাড়ী বীমা সংস্থা রয়েছে। সরকার বীমা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নীতিগত সার্বিক সহযোগীতা করে থাকে, কোন অর্থ সহায়তা দেয় না। বরং গাড়ী বীমা সংস্থাগুলি হতে সরকার ভ্যাট হিসাবে বছরে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেয়ে থাকেন।

গাড়ী বীমা গাড়ীর মালিকের জন্যও যথেষ্ট নিশ্চয়তা মূলক একটি ব্যবস্থা। চালক ও মালিক উভয়ের মধ্যে গাড়ী বীমার ক্ষেত্রে কি ভাবে সমঝোতা স্থাপিত হবে তারও গ্রহণ যোগ্য উপায় জার্মানির গাড়ীবীমা ব্যস্থা অনুসরণ করলেই পাওয়া যায়।


দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ীর চালক নির্দোষ হলে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ীর যথাযত ক্ষতিপুরণ পাওয়ার নিশ্চয়তাও উক্ত বীমা ব্যবস্থায় রয়েছে। বাংলাদেশে জার্মানির গৃহিত যানবাহণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণে উত্তম হবে- কয়েকজন ব্যক্তিকে জার্মানিতে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জণের সুযোগ দিয়ে তাঁদের দ্বারা অথবা বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কয়েকজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাঁরা জার্মানিতে গাড়ী ব্যবহার করেন তাদের সহযোগীতা নিয়ে অথবা জার্মান সরকারের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সরাসরি সহযোগীতা নিয়ে জার্মানির আদলে নীতিগত ও প্রয়োগ মুখী বাধ্যতামূলক গাড়ীবীমাসহ যানবাহণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তুলা। (দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে বাংলাদেশ সরকার মানবিক কারণে যে যতসামান্য অর্থ দিয়ে থাকেন তাতে পরিবারটির কতটুকু কি হয়ে থাকে তার চেয়ে বড় এতে প্রতিয়মাণ হয়- সুবিধা ভোগ করবেন গাড়ীর মালিক এবং তার দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে দায়ভার বহণ করবেন সরকার। দায়ভার সরকার বহণ করলে কাউকে সংযত রাখা কখনই সম্ভব হবে না। (যে দায়ী দায়ভার বহণে তাকেই বাধ্য করতে হবে।)

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার বাড়তি একটি কারণ-
বাংলাদেশে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাড়তি একটি সমস্যা হলো নছিমন, করিমন, ভটভটি, অটো, বোরাক, বেটারীচালিত রিক্সা বা ঐ ধরণের শক্তিচালিত অত্যান্ত নিম্ন মাণের যন্ত্র যান। যাকে বলা যায় যান্ত্রিক যুগে যন্ত্রের অপব্যবহার। যাঁরা উক্ত যানবাহণ চালান তারা রাস্তা চলাচলের নিয়ম কানুন সম্পর্কে যেমন অজ্ঞ তেমনি যান্ত্রিক ত্রুটির ভয়াবহতা সম্পর্কেও জ্ঞানহীণ। রাস্তাচলাচলে সাধারণ জনগনের জীবন এদের হাতে জিম্মি। সাধারণ জনগনের জীবন নিয়ে মরণ খেলা করার অধিকার সভ্য সমাজ কখনই অনুমোদন করতে পারে না।

জনগণের জীবন রক্ষার জন্য যথাযত কর্তৃপক্ষের উচিৎ হবে-

১। উক্তরূপ যানবাহণ রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তুলার প্রকৌশলগত উন্নয়ণ সাধণ এবং বাধ্যতা মূলকভাবে চালককে ড্রাইভিং শিখতে ও গাড়ী বীমার আওতায় নিয়ে আসা। অথবা ২। উক্ত রূপ যানবাহণ চলাচল সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ করে দেওয়া।

বর্তমান যান্ত্রিক যুগে সড়ক দুর্ঘটনা বিশ্বের প্রতিটি জাতিরই জাতীয় সমস্যারূপেই দেখা দিয়েছিল।
তাদের অনেকই জাতির বৃহত স্বার্থে এই সমস্যার যৌক্তিক সমাধান কি গবেষণা করেই জনগনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যেটা নিশ্চিত করে তেমন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছেন।

আমাদের বুঝতে হবে এরূপ সমস্যা নিয়ে কথা বলার অর্থ রাষ্ট্র বা কোনও সরকারের বিরুদ্ধে নয়।
কারণ বিশ্বে এমন একটি দেশ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে না যে দেশের রাজনীতিবিদগন সকল বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখেন। এমনটা দোষেরও নয়। এটা মানুষের মানবিক বৈশিষ্ট্যই বহণ করে। সে জন্যই বলতে হয় সাধাণ জনগণ হতে জাতীয় সমস্যা নিয়ে কথা বলার অর্থ রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রনায়কদের বিরুদ্ধে নয়।

কারণ জাতীয় সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব সরকার বা রাষ্ট্রযন্ত্র যাঁরা পরিচালনা করেন তাঁদের। তাঁদের কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের। কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হয়ে সমাধানের উপায় কী তাদের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে। যেটা উন্নত ও শিক্ষিত জাতি করে থাকেন।


প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যায় বিশিষ্ট্য ব্যক্তি জনাব ইলিয়াস কাঞ্চন দীর্ঘদিন যাবত সড়ক দুর্ঘটনা রোধের যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। সমস্যাটি জাতীয়। ব্যক্তিগত নয়।

বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়কে মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিল দেখে বড়ই কষ্ট হয় এবং জান্তে ইচ্ছা হয়- এ জাতির বিবেকবান মানুষেরা এই মর্মান্তিক দৃশ্য দেখে ও জেনেও কি করে সহ্য করেন? তাঁরা কেনো সমবেতভাবে সমস্যার সমধান কি হতে পারে তুলে ধরছেন না। বিষয়টিতো রাষ্ট্র বা সরকারের বিরুদ্ধে নয়।

পরিশেষে বলবো আমরা যদি সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে চাই তবে অবশ্যই উচিৎ হবে একটি উন্নত দেশে গৃহিত আধুনিক যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হুবহু অনুসরণ করা। এবং এখন হতেই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদেরকে রাস্তা চলাচল ও রাস্তা পারাপারের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গ্রহন করা। যার কোনই বিকল্প নাই।

জার্মানিতে ৩২ বৎসর গাড়ী চালানর বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে জার্মানির যানবাহণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অতি গুরুত্বপূর্ণ মূল হাতিয়ার অতি সংক্ষেপে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

লেখকঃ জার্মান প্রবাসী
[email protected]