বঙ্গবন্ধু’র ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নড়াইল জেলা জজ আদালতের কর্মসূচির বর্ণীল সমাপ্তি

0
40
বঙ্গবন্ধু'র ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নড়াইল জেলা জজ আদালতের কর্মসূচির বর্ণীল সমাপ্তি
বঙ্গবন্ধু'র ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নড়াইল জেলা জজ আদালতের কর্মসূচির বর্ণীল সমাপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ০৭ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত নানামুখী আয়োজনের মধ্য দিয়ে নড়াইল বিচার বিভাগ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে।

ঐতিহাসিক ০৭ মার্চ বিচার বিভাগ নড়াইল এর কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডিজিটাল হাজিরা কার্যক্রম এর শুভ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শুরু হয়। অগ্নিঝরা ০৭ মার্চের ঐ দিন সন্ধ্যায় নড়াইল বিচার বিভাগ এর অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। এরপর নড়াইল বিচার বিভাগের সর্বস্তরের বিচারক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে একটানা ১১ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় ব্যাডমিন্টন, কেরাম, দাবা, লুডু, পঞ্জা, কার্ড সহ অন্যান্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা যার শুভ সমাপ্তি ঘটে ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রাত্রিকালীন বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।

১২ টি দলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ব্যাডমিন্টনের ফাইনাল রাউন্ডে জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী মো: মশিউর রহমান ও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজস্ট্রেট মেহেদী আল মাসুদ মুখোমুখি হন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আকরাম হোসেন ও এ এইচ এম তোয়াহার টিমের সাথে। জেলা জজের টিম আধিপত্য বজায় রেখে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ঘরে তুলে নেন। জেলা জজ মুন্সী মো: মশিউর রহমান ব্যাডমিন্টন ছাড়াও দাবায় প্রথম স্থান অর্জন করেন। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর টিম জেলা জজের টিমকে হারিয়ে কেরামে চাম্পিয়ন হন। পঞ্জায় চ্যাম্পিয়ন হন যুগ্ম জেলা জজ এ এইচ এম তোয়াহা। কর্মচারীদের মধ্যে রাজন ও রবিনের টিম কেরাম খেলায়, আনিস দাবায় ও শিউলি লুডুতে প্রথম হন।

নড়াইল বিচার বিভাগ ১৭ মার্চ ভোর ০৬ টায় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিনটি শুরু করে। এরপর জাতির জনক বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে নড়াইল বিচার বিভাগ অংশ নেয় বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও জীবন দর্শন নিয়ে এক তথ্যবহুল আলোচনা সভায়। জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী মো: মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সানা মো: মাহরুফ হোসাইন, চীফ জুডসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী আল মাসুদ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: কেরামত আলীসহ্ নড়াইল বিচার বিভাগের সকল পর্যায়ের বিচারক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ। আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নড়াইল বারের সভাপতি জনাব ওমর ফারুক, পাবলিক প্রসিকিউটর মো: এমদাদুল ইসলাম, অন্যান্য আইনজীবীবৃন্দ, এডিশনাল পুলিশ সুপার এস এম কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ চৌধুরী।

আলোচনা সভা শেষে জেলা জজের বাংলোতে শিশুদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন ও দৌড় প্রতিযোগিতা। ক, খ ও গ বিভাগে অনুষ্ঠিত দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে যথাক্রমে তুশি (৫), মাহজাবিন (১০) ও মাহির (১২)। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় ক ও খ বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে যথাক্রমে তাফিফ (৬) ও নাফিসা (১০)।

সেখানে নারী প্রতিযোগীদের মধ্যে লুডু ও পিলো পাসিং অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাঙালি জাতির অনান্দের এই দিনে চিরায়ত বাঙালী খাবারকে তুলে ধরার জন্য ১২ রকম ভর্তা ও পুরোপুরি বাঙালি খাবার সহযোগে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়।

দুপুরের খাবারের পর নড়াইল বিচার বিভাগ ঐতিহ্যবাহী চিত্রা নদীতে নৌবিহারে অংশগ্রহণ করে। এরপর মাগরিবের বিরতি শেষে সন্ধ্যা ০৭ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয় আভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার, পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সহ নড়াইল জেলার উচ্চপদস্থ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

গ্র্যান্ড ফিনালের পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গীত পরিবেশন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ সানা মো: মাহরুফ হোসাইন, যুগ্ম জেলা জজ মো: আকরাম হোসেন ও বেঞ্চ এসিস্ট্যান্ট রাজন ও তার দল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। জেলা জজ মুন্সী মো: মশিউর রহমান তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন নিজ দায়িত্ব যথাযথ ভাবে করাই দেশ প্রেম। তিনি উপস্থিত সকলকে পুঙ্খানুপু্ঙ্খভাবে নিজ কর্তব্য পালনের জন্য নির্দেশনা দেন। সবশেষে সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে রাতের খাবারের পর জেলা জজ মুন্সী মো মশিউর রহমান ঐতিহাসিক এই দিনের শুভ সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, বিগত বছরের ০৭ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ডিজিটাল কজলিস্ট ও সমগ্র জেলা জজ আদালত চত্বর সিসিটিভি এর আওতায় আনা হয় ও একই ভাবে ১১ দিন ব্যাপী অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিগত বছরের ডিজিটালাইজেশনের ধারাবাহিকতায় এ বছরেও ঐতিহাসিক ০৭ মার্চে নড়াইল ডিজিটাল হাজিরা কার্যক্রম ও সকল স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অংশগ্রহণে এই ধরনের ব্যাতিক্রমী আয়োজন সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।