নড়াইল-ফুলতলা সড়কে রাস্তা, ১টি ব্রীজ ও ১৯টি কালভার্ট নির্মাণ কাজের ৭ মাস পার!

0
357
নড়াইল-ফুলতলা সড়কে রাস্তা, ১টি ব্রীজ ও ১৯টি কালভার্ট নির্মাণ কাজে ৭ মাস পার!
নড়াইল-ফুলতলা সড়কে রাস্তা, ১টি ব্রীজ ও ১৯টি কালভার্ট নির্মাণ কাজে ৭ মাস পার!

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইল-গোবরা-ফুলতলা (খুলনা) সড়কের ২৮ কিঃমিটার রাস্তা, ১টি ব্রীজ ১৯টি কালভার্টের কার্যাদেশ ৭ মাস অতিবাহিত হলেও কাজ নামমাত্র শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭ কিঃমিঃ রাস্তা খুড়ে বালু দেওয়া, মিশ্রিত বালু ও কোয়া দেওয়া এবং কয়েকটি পয়েন্টে রাস্তার পার্শ্বের মাটি দেওয়ার কাজ চলছে। এখানে রাস্তার পার্শ্বে শক্ত মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও নরম কাঁদা দেওয়া হচ্ছে। ১টি ব্রীজ ও ১৯টি কালভার্টের কাজ খোড়াখুড়ি পর্যায়ে রয়েছে। ১ কিঃমিঃ বেশী সংযোগ সড়কের জমি এখনও অধিগ্রহন করা হয়নি। রাস্তা চওড়া করার জন্য নড়াইল-থেকে গোবরা প্রায় ৬ কিঃমিঃ জায়গায় জেলা পরিষদের লাগানো প্রায় ৫শ গাছ এবং রাস্তার পার্শ্বের বৈদ্যুতিক খুটিও অপসারণ করা হয়নি। এদিকে এ সড়কের ২০ কিঃমিঃ রাস্তা সম্পূর্ন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বড় বড় গর্ত, ধুলো-বালি,অসহনীয় ঝাঁকি এখন যাত্রীদের নিত্য সঙ্গী হয়ে দাড়িয়েছে। এ নির্মান কাজ সম্পন্ন হবার সময় সীমা রয়েছে ২০২০ সালের জুন মাস।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা মহাসড়কে যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় গত মে মাসের ৭ তারিখ এ সড়কে ২৭কিঃমিঃ ২ লেন বিশিষ্ট রাস্তা, ১ কিঃমিটারের বেশী সংযোগ সড়ক, ১টি ব্রীজ এবং ১৯টি কালভার্টের নির্মান কাজের কার্যাদেশ পায় মোঃ মইনুদ্দীন বাঁশি জেভি ফার্ম । এ কাজের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে ১শ ১৭কোটি ৮৮লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সাব কন্ট্রাক্ট নিয়ে অনবিজ্ঞ সিঙ্গাশোলপুর ইউপি চেয়ারম্যান উজ্জল শেখ সাব কন্ট্রাক্ট নিয়ে গোবরা, বড়কুলা, আড়পাড়া, চাকই এলাকার রাস্তা খুড়ে বালু দেওয়া এবং কয়েকটি পয়েন্টে রাস্তার পার্শ্বের মাটি দেওয়ার কাজ করছে। দেখা গেছে রাস্তার পার্শ্বে শক্ত মাটি না দিয়ে অনিয়ম-দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে পার্শ্বের জলাশয় থেকে নরম কাদা-মাটি এনে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দু’একটি রাস্তায় মিশ্রিত বালু ও কোয়া দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। গোবরা খালের ওপর ব্রীজের কাজ শুরু হলেও নির্মান সামগ্রী রাখার কোনো জায়গা নেই । এছাড়া এ সেতুর সংযোগ সড়কের জন্য সদরের গোয়াইলবাড়ি, কলোড়া এবং গোবরা বাজারে ১ কিঃমিটারের বেশী ৫.০৮ একর জমি এখনও অধিগ্রহন সম্ভব হয়নি। এসব জায়গায় আনুমানিক ৫১টি পাকা ও আধা পাকা বাড়ি, দোকান সরাতে এবং অনেক গাছ-গাছালি কাটতে হবে। এসব জমি অধিগ্রহনের জন্য প্রায় ৬ মাস পূর্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও ক্ষতিপূরনের পূর্ণাঙ্গ এষ্টিমেট পাওয়া যায়নি। এদিকে এ সড়ক দিয়ে এখন চলাচল করাই দায় হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশী বেহাল অবস্থা কাড়ার বিল, বড়েন্দার, কলোড়া, গোবরা, মির্জাপুর, রুখালি এবং চাকই। এতটাই বেহাল অবস্থা যে হেটে চলাই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।

মইনুদ্দীন বাঁশি জেভি ফার্ম-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার সৈয়দ ইমতিয়াজ হোসেন রতন বলেন, নানাবিধ কারনে এ কাজ শুরু করতে একটু দেরী হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যথা সময়ে কাজ শেষ করার জন্য। নরম কাদা-মাটি দেওয়ার ব্যাপারে বলেন, রাস্তা ঠেকাতে কিছু জায়গায় বাধ্য হয়ে প্রথম লেয়ারে নরম মাটি দেওয়া হচ্ছে। পরে শক্ত মাটি দেওয়া হবে। এছাড়া ব্রীজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কাজের দু’পার্শ্বে এখনও জায়গা অধিগ্রহন না করায় মালামাল রাখতে সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৗশলী মোঃ ওমর আলী বলেন, রাস্তা চওড়া করার জন্য নড়াইল থেকে গোবরা পর্যন্ত ৭ কিঃমিঃ জেলা পরিষদের প্রায় ৫শ বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছ এবং রাস্তার পার্শ্বে বৈদ্যতিক খুটি অপসারণ সম্ভব হয়নি। এসব বিষয় সংশ্লিষ্ট অফিসকে জানানো হয়েছে। ব্রীজের দুই পার্শ্বে এখনও জমির অধিগ্রহণ সম্পন্ন না হওয়ায় ব্রীজের নির্মাণ সামগ্রী রাখতে সমস্যা হচ্ছে। দোকান ঘর, বাড়ি, গাছপালা ও জমির ক্ষতিপূরণের পরিমান সংক্রান্ত তথ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হলেও কোনো ফাইনাল রিপোর্ট এখনও আসেনি। রাস্তায় নরম মাটি দেওয়ার ব্যাপারে বলেন, রোলার দিয়ে কমপ্যাকশন করলে ঠিক হয়ে যাবে। কাকে সাব কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়েছে সেটা আমাদের জানার বিষয় নয়। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই কাজের গুণগত মান দেখা হবে বলে জানান।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৗশলী মোঃ ফরিদ উদ্দীন বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না হবার আশংকার কারণে আরও এক বছর সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বারদ্দও কম পাওয়া গিয়েছে। গত অর্থ বছরে ১০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এ অর্থ বছরের জন্য আরও ৪০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।