প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত আবরারের মা

7
63

নিউজ ডেস্ক

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী নিহ*ত আবরার ফাহাদের পরিবার। এসময় আবরার হ*ত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির উপায় খোঁজার জন্য আমি ইতোমধ্যে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন মায়ের অবস্থান থেকে বিষয়টি দেখায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ও মা রোকেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসাথে তারা সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য প্রশাসন, পুলিশ ও দেশের সাধারণ মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

আবরারের মা রোকেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি মায়ের আসনে থেকে ঘটনার পর হ*ত্যাকারীদের বিরু*দ্ধে যে ক*ঠোর ভূমিকা নিয়েছেন সে জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।’ প্রধানমন্ত্রী আবরারের বাবা-মাকে বলেন, ঘটনা ঘটার পর থেকে অ*পরাধীরা কারা বা কোন দলের তা দেখা হয়নি। ‘তারা কোন দলের তা আমি জানতে চাই না। আমার কাছে হ*ত্যাকারী একজন হ*ত্যাকারী।’ তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা যা হারিয়েছেন, তাতে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমার কাছে নেই। আমার দিকে দেখুন, এক রাতে আমি সবকিছু হারিয়েছি। নিকট আত্মীয় হারানোর ব্যথা আমি বুঝি।’

হ*ত্যাকারীরা মানুষ নয় এমন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা কীভাবে তাকে হ*ত্যা করতে পারে, যার সাথে তারা পড়াশোনা করছিল? ঘটনার পর পরই পুলিশকে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে বুয়েটের কিছু শিক্ষার্থী ফুটেজ সংগ্রহে কেন বাধা দিচ্ছিল তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়।’

প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, বৈঠক কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের পরই তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবরারের মা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীও তাকে জড়িয়ে ধরে নির্ধারিত আসনে বসার পরিবর্তে সেখানেই বসে যান।

এ সময় অন্যদের মধ্যে আবরারের ভাই আবরার ফায়েজ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এবং কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আতউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ভোর রাতে বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে পিটিয়ে হ*ত্যা করা হয়। ওইদিন রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা হলে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার মধ্যবর্তী স্থান থেকে পুলিশ তার লা*শ উদ্ধার করে। আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ এ ঘটনায় চকবাজার থানায় ১৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।