মাশরাফীর ঝটিকা অভিযানের পর নড়াইলে ৩ ডাক্তারকে অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর নোটিশ

0
30

স্টাফ রিপোর্টার

গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছিলেন নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। কাউকে কিছু না জানিয়ে বৃহস্পতিবার সাড়ে ৩টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা ২ ঘন্টা নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ঝটিকা সফরে যান মাশরাফী। নারী ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যার কথা শোনেন। ওই সময় পুরো হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। এরপর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করেন সাংসদ মাশরাফী। এসময় তার সঙ্গে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, এছাড়া হাসপাতালের অবকাঠোমো দেখভাল করা প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত বিভিন্ন মানুষের নিকট থেকে প্রাপ্ত নানাবিধ অভিযোগ এবং নিজের দেখা অনিয়মের ব্যাপারে তিনি সকলের সঙ্গে আলোচনা করেন। বৈঠকে হাসপাতালের নানা অনিয়মের মধ্যে বাইরের অ্যাম্বুলেন্স, দালাল এবং বিক্রয় প্রতিনিধিদের কঠোর ভাবে দমনের নির্দেশ দেন। তিনি হাসপাতালকে মানুষের সেবার জন্য উন্মুক্ত করতে বলেন। এছাড়া হাসপাতালে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি।

দুদিন না পেরোতেই আবার হাসপাতালে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। মাশরাফীর অভিযানের পর সদর হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, শনিবার (২৭ এপ্রিল) নড়াইল সদর হাসপাতালে দু’জন কর্তব্যরত চিকিৎসক অনুপস্থিত ছিলেন। হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মশিউর রহমান বাবু জানান, শনিবার হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মধ্যে ডাঃ শওকত ও ডাঃ মুস্তাফিজুর রহমান অনুপস্থিত ছিলেন। তবে আজ রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকল ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন হাসপাতালে কোন আয়ার ব্যবস্থা নেই। এদিকে সুইপার আছেন তিন জন৷ তবে ইতোমধ্যে একজন সুইপারের ক্যানসার হয়েছে। তিনি বলেন হাসপাতালে বড় সমস্যা হল প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই। এছাড়া হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে কিছুদিন হাসপাতাল সুপার না খাকায় তাদের দৌরাত্ম্য আরো বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, এমপি মহোদয় হঠাৎ হাসপাতাল পরিদর্শনের পর থেকে হাসপাতালের কার্যক্রমের গতি আগের থেকে বেড়েছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আব্দুস সাকুরকে হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, “আমি গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) যোগদান করেছি। আমি আশাবাদী সকলের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা দিতে পারব। তবে চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক ও পরিচ্ছন্ন কর্মী দিতে হবে। হাসপাতালের ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টি হলে হাসপাতাল চত্ত্বর ব্যাবহারের আনুপযোগী হয়ে পড়ে। আবর্জনায় পরিপূর্ণ ড্রেন এবং নানা নোংরা পরিবেশের কারণ জানতে চাইলে তিনি সুইপার না থাকা ও নড়াইল পৌরসভার ওপর দায় চাপান। তবে রাজস্বখাত থেকে সুইপার নিয়োগ না দিলে এর স্থায়ী সমাধান কখনোই হবে না। এরপর তিনি হাসপাতালে দালাল উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের সহযোগিতা চান।

এদিকে নড়াইল জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা’র সাথে হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে আলাপ করলে তিনি জানান, ডাক্তার নিয়োগের ব্যাপারে যোগাযোগ চলছে এবং আগামী ২ মে, ২০১৯ইং তারিখে বিকাল ৪টায় হাসপাতালের সভাকক্ষে হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। তিনি জানান গত ২৫ শে এপ্রিল বুধবার যে তিন জন ডাক্তার অনুপস্থিত ছিলেন তাদের অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।