আজ সাংবাদিক শিমুল হত্যার ২য় বার্ষিকী, এখনও হত্যাকারীদের বিচার শুরু হয়নি

0
7

স্টাফ রিপোর্টার

আজ রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যার ২য় বার্ষিকী। দিনটি উপলক্ষে আজ শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সকাল ৯:৩০ মিনিটে শহীদ সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলের কবর জিয়ারত করা হয়। সকাল ১০:০০ ঘটিকায় কালো ব্যাজ ধারণ করে শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিক, সর্বস্তরের জনসাধারণ, সমকালের অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক তপন দাস, নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী সন্তান ও স্বজনদের উপস্থিতিতে একটি শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি শাহজাদপুর উপজেলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে শাহজাদপুর উপজেলা পরিষদের শহীদ স্মৃতি সম্মেলন কক্ষে একটি শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার ভুমি জনাব হাসিব সরকার, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রফেসর আজাদ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মুস্তাক আহমেদ, অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ, সমকালের অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক তপন দাস, অধ্যক্ষ গোলাম সাকলায়েন, পাবনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হামিদ খান, এবিএম ফজলুর রহমান, আমিনুল ইসলাম খান রানা।

আরো বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আবুল কাশেম, আল আমিন, জাফর লিটন, ওমর ফারুক হাসানুজ্জামান তুহিন, কাজী শওকত, ইসলাম শেখ, কাজল, আলামিন হোসেন, আশিকুল হক দিনার, ভিপি লুৎফর, শহিদুল ইসলাম শাহীন প্রমূখ।

বক্তব্যে প্রত্যেক বক্তাই গত দুই বছরে বিচার কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা মামলাটি দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের তথ্য সংগ্রহের সময় দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল মাথায় গুলিবিদ্ধ হন, মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তখন সারাদেশে আলোচনায় উঠে আসে। পরেরদিন সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন বাদী হয়ে শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র (সাময়িক বরখাস্ত) হালিমুল হক মিরুসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। কিন্তু দুইবছর পেরিয়ে গেলোও এখনো শুরু হয়নি মামলার বিচারকার্য।

সংঘর্ষের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়- মিরু তার বাড়ির সামনে অস্ত্র হাতে পায়চারি করছেন। আর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ সাংবাদিক শিমুলকে মেয়রের লোকজন তার বাড়িতে নিয়ে যায়।

হত্যাকান্ডটি সারা দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এবং দেশ ও বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হয়। সমস্ত দেশের সাংবাদিকরা বিক্ষোভে ফেটে পরে। মেয়র মিরুর ভাই মিন্টুকে সেদিনই পুলিশ গ্রেফতার করে, কয়েকদিন পরে প্রধান আসামি মিরুকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ।

শিমুলের স্ত্রীর মামলায় মেয়র মিরু এখন জেলহাজতে রয়েছেন। তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিমল কুন্ডুসহ স্থানীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, ঘটনার সময় বেশ কয়েকটি অস্ত্র ব্যবহৃত হলেও পুলিশ বৈধ ও অবৈধ মিলে মাত্র দুইটি অস্ত্র উদ্ধার করতে পেরেছে। এছাড়া ঘটনার সময় সাংবাদিক শিমুলের ব্যবহৃত ক্যামেরা এবং মোবাইল এখনও উদ্ধার করা যায়নি।