অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইটওয়াশ করলো ইংল্যান্ড

145
6

ডেস্ক রিপোর্ট

ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম সেরা এক ইনিংস খেলে দলকে জেতালেন বাটলার আর তাতেই ইংলিশদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হতে হলো অস্ট্রেলিয়াকে। এরআগে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয় আগেই নিশ্চিত করেছিলো ইংলিশরা। সবকটি ম্যাচেই দাপটের সঙ্গে জয় ছিনিয়ে নেয় ইংল্যান্ড। শেষ ম্যাচটি ছিলো রোমাঞ্চে ভরপুর। জিতলেই নতুন ইতিহাস গড়া হবে ইংলিশদের। উত্তেজনাকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটে জয় পায় ইয়ন মরগ্যানের দল। এর আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ৩-০, ৪-০ ব্যবধানে হারালেও এই প্রথম ৫-০তে হারালো ইংলিশরা।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে রোববার টস জিতে অস্ট্রেলিয়া ৩৪.৪ বলে গুটিয়ে গিয়েছিল ২০৫ রানে। রান তাড়ায় এক পর্যায়ে বড় হারের মুখে ছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু বাটলারের বীরোচিত সেঞ্চুরিতে জিতেছে তারা ৯ বল বাকি রেখে।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসের পর একটি ফলই মনে হচ্ছিল অবধারিত। কারন এই সিরিজেই ৪৮১ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছে, অনায়াসে ৩১১ রান তাড়া করেছে। তাদের সামনে ২০৬ রানের লক্ষ্য হওয়ার কথা কেবল আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু শেষ ম্যাচে জেগে ওঠেছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। নতুন বলে আগুন ঝরালেন বিলি স্ট্যানলেক। কেন রিচার্ডসনসহ অন্য বোলাররাও করলেন লড়াই। ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে হারাল ১১৪ রানেই।

অস্ট্রেলিয়া তখন হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর সান্ত্বনার আশায়। কিন্তু বাটলারের মনে ছিল অন্য ভাবনা। ২৭ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন বাটলার। আরেক পাশে উইকেট পড়লেও তিনি চালিয়ে গেছেন লড়াই। শেষ পর্যন্ত সঙ্গী হয়ে আসেন দশে নামা আদিল রশিদ।

নবম উইকেটে দুজনে গড়েন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের রেকর্ড ৮১ রানের জুটি। জুটিতে বাটলারের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান, রশিদের ২০। শেষের কাছে গিয়ে আবার নাটকীয়তা। জয় থেকে ১১ রান দূরে মার্কাস স্টয়নিসের বলে আউট রশিদ।

কিন্তু শেষ ব্যাটসম্যান জেইক বলকে নিয়ে বাকি কাজটা সেরে ফেলেন বাটলার। ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে বাটলারের বাউন্ডারিতে উল্লাসে ফেটে পড়ে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের টইটম্বুর গ্যালারি। বাটলার শেষ পর্যন্ত ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১২২ বলে অপরাজিত ১১০ রান করেন।

এরআগে, অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা যে ছিল উড়ন্ত। দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও অ্যারন ফিঞ্চ ৬ ওভারেই অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেন ৫৮ রান। চিত্র বদলায় সপ্তম ওভারে মইন আলি আক্রমণে আসার পরপরই। এই অফ স্পিনারের তৃতীয় বলেই বোল্ড ১৭ বলে ২২ রান করা ফিঞ্চ। এক বল পর সুইপ খেলে বিদায় তিনে নামা মার্কাস স্টয়নিয়সও।

দারুণ খেলতে থাকা হেড ফিরেছেন টানা তৃতীয় ফিফটির পর। ৪২ বলে ৫৬ করে আউট হন। সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি করা শন মার্শকে ফিরিয়ে তৃতীয় শিকার ধরেন মইন। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে যখন রান আউট টিম পেইন, বিনা উইকেটে ৬০ রান থেকে অস্ট্রেলিয়ার রান তখন ৫ উইকেটে ১০০।

সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়াকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা অ্যালেক্স কেয়ারি ও টপ অর্ডার থেকে সাতে নেমে আসা ডার্চি শর্ট। ষষ্ঠ উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন দুই বাঁহাতি। ৪০ বলে ৪৪ রান করা কেয়ারিকে ফিরিয়ে প্রথম ওয়ানডে উইকেটের স্বাদ পান অভিষিক্ত পেসার স্যাম কারান। এরপর দলকে যা একটু টেনেছেন শর্ট, অন্য পাশ পাননি সঙ্গী। অপরাজিত থাকেন ৫২ বলে ৪৭ রানে। অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ৩৫ ওভারের আগেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৩৪.৪ ওভারে ২০৫/১০ (হেড ৫৬, কেয়ারি ৪৪, শর্ট ৪৭*; কারান ২/৪৪, মইন ৪/৪৬)।

ইংল্যান্ড: ৪৮.৩ ওভারে ২০৮/৯ (বাটলার ১১০*, রশিদ ২০; স্ট্যানলেক ৩/৩৫, রিচার্ডসন ৩/৫১, স্টয়নিস ২/৩৭)।

ফল: ইংল্যান্ড ১ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ৫-০তে জয়ী

ম্যাচ সেরা: জস বাটলার

সিরিজ সেরা: জস বাটলার।

Pic: Reuters