শাহজাদপুরে প্রতিপক্ষের ভয়ে শতাধিক পরিবার ২ মাস ধরে এলাকাছাড়া

18
4

স্টাফ রিপোর্টার

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের বাতিয়া গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে ২ মাস ধরে মন্ডল গোষ্ঠির শতাধিক নিরীহ পরিবার এলাকাছাড়া রয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রাণভয়ে শতাধিক পরিবারের প্রায় ৫’শ নিরীহ গ্রামবাসীর অন্যত্র পালিয়ে থাকার সুযোগে তাদের ঘরবাড়ি, সহায় সম্বল দিনের পর দিন লুটেরও অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ১’শ ছাত্রছাত্রী পরিবারের সাথে অন্যত্র পালিয়ে বেড়ানোয় তাদের লেখাপড়াও বন্ধ রয়েছে। বাড়ি ফিরতে না পারায় ওইসব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ আর হতাশা বিরাজ করছে। তারা ২ মাস নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে না পেরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিনযাপন করছে।

গত পহেলা ফ্রেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টায় জমিজমা নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে বাতিয়া গ্রামের ২ গোষ্ঠির সংঘর্ষকালে ফালাবিদ্ধ হয়ে রাসেল ফকির (৩২) নামের এক যুবক নিহতের ঘটনায় মন্ডল গোষ্ঠির ৩২ জন নামীয় ও আরও ২০/২৫ জন অজ্ঞাতকে আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের পর থেকে ওই মামলার আসামী না হয়েও কেবল মন্ডল গোষ্ঠির সমর্থক হওয়ার কারণে তারা নিজ বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বাতিয়া গ্রামের ২ মাস ধরে ঘরছাড়া নিরীহ গ্রামবাসীর মধ্যে চাদের প্রামাণিক, ছাত্তার মন্ডল, আসাদুল প্রামানিক, আব্দুল হাকিম, মিনা খাতুন, আখি খাতুন, মোমেনা খাতুন, রনজিদা খাতুন আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন,‘গত ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে অবধি প্রতিপক্ষ ফকির গোষ্ঠির সমর্থকেরা রাসেল হত্যা মামলার ৩২ নামীয় আসামী ছাড়াও মন্ডল গোষ্ঠির লোকজনের বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাটসহ এলাকায় ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেছে। প্রতিদিনই কারো ঘরের চাল, কারো বাড়ির বেড়া, কারো বাড়ির খুঁটিসহ মালামাল খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । গত ২ মাসে বাড়িতে অবস্থান করতে না পারায় তাদের গরু বাছুর, ঘরবাড়ি, দোকানপাট, সহায় সম্বল লুট করে অবর্নণীয় আর্থিক ক্ষতিসাধণ করা হচ্ছে।’

বাতিয়া জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র রোমান (১৪), হযরত (১৪) বাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া, ১ম শ্রেণির ছাত্রী মিম বলেন,‘গত ২ মাস ধরে তারা স্কুলে যেতে পারছে না। তারা বাড়িতে ও প্রতিদিন স্কুলে যেতে চায়। তাদের মতো প্রায় ১’শ শিক্ষার্থীরও লেখাপড়া ২ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।’ এ ব্যাপারে নরিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক (মুন্ত্রী) ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ফকির গোষ্ঠিকে নিষেধ করার পরেও এটা হচ্ছে। গতকালও ইউনিয়ন পরিষদে এ বিষয়ে আলোচনা করে বাতিয়া গ্রামে শাস্তি শৃংখ্যলা ও সামাজিকতা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে বলা হয়েছে।’ অবিলম্বে নিজ বাড়িঘরে ফেরার উপযুক্ত ক্ষেত্র তৈরিরও দাবি জানিয়েছে এলাকাছাড়া ওই শতাধিক পরিবারের সদস্যরা।