স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিডিয়াকর্মীদের ডেকে নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা’র বিরূদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করলেন। সোমবার (৮ মে) দুপুরে তিনি মিডিয়াকর্মীদের নিজ কার্যালয়ে ডেকে বলেন, নড়াইল জেলা পরিষদের পুকুর দখল করে উন্নয়নমুলক কাজ করছেন পৌরমেয়র আঞ্জুমান আরা। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া কাজ বন্ধের জন্য উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তথাপিও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই জেলা পরিষদের পুকুর যাতে অবৈধ ভাবে দখল না হয় তার জন্য প্রয়োজনে আদালতে পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা’র নামে মামলা করা হবে।
এসময় জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. লুৎফর রহমান, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন কুমার সাহা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি খন্দকার শামীম, হাবিবুল্লাহ বিপ্লব উপস্থিত ছিলেন।
সুবাস চন্দ্র বোস মিডিয়াকর্মীদের আরোও বলেন, ’১৯০৭ সালে তৎকালীন জমিদাররা কালিদাস ট্যাংক পুকুরটি খনন করেন। পরবর্তীতে জেলা পরিষদের অধীনে হস্তান্তর করেন। সব কাগজপত্র জেলা পরিষদের কাছে রয়েছে। আইনের তোয়াক্কা না করেই পৌর মেয়র পুকুরের খনন কাজ করছেন।
পৌর কর্তৃপক্ষের আগ্রাসি কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করে ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। সরাসরি ও ডাকযোগে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তবে তারা তা গ্রহণ করেনি। পুকুর খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আদালতে মামলাসহ আইনগতভাবে এর মোকাবিলা করা হবে।
পুকুর দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নড়াইল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুমান আরা বলেন, ’পুকুরের জমির কাগজপত্র পৌরসভার নামে। জমি পৌরসভার দখলে রয়েছে। পৌরসভা নিয়মিত খাজনা দিচ্ছে। পৌরসভার জমিতেই পৌরসভা কাজ করছে।
জানা গেছে, নড়াইল পৌর ভবনের পেছনের পুকুরটিতে বিউটিফিকেশনের নামে প্রায় ৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। গত বছরের ২২ অক্টোবর নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। পুকুরটি মহিষখোলা মৌজার ৫২৮ নম্বর দাগে। জমির পরিমাণ ২ একর ৫ শতক। পুকুরটি কালিদাস ট্যাংক নামে পরিচিত।
জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর ১২ এপ্রিল তদন্ত করতে যান স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জুলিয়া সুকায়না। তার সামনেই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুবাস চন্দ্র বোস ও মেয়র আঞ্জুমান আরা বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। জুলিয়া সুকায়না উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে তার কার্যালয়ে হাজির হতে বলেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, ’স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চিঠির আলোকে স্থানীয় সরকার শাখা তদন্ত করেছে। বাস্তব চিত্র তুলে ধরে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। দু’টি প্রতিষ্ঠানই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধিনে। সেখান থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে।