বাঘারপাড়ায় ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ জেলা পরিষদের গাছ কর্তন!

0
9
বাঘারপাড়ায় ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ জেলা পরিষদের গাছ কর্তন!
বাঘারপাড়ায় ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ জেলা পরিষদের গাছ কর্তন!

স্টাফ রিপোর্টার

নিলাম ছাড়াই লাখ টাকার সরকারি গাছ কেটে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। নিয়ম না মেনেই যশোর জেলা পরিষদের আওতাধীন বাঘারপাড়া উপজেলা সদরের গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র মতে, অনেক বছর আগের পুরোনো রেইনট্রি গাছ উপজেলা সদরের চৌরাস্থা মোড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। সম্প্রতি ধীর ধীরে গাছটি শুকিয়ে মারা যায়। মরা গাছটি কাটার কোনো ব্যবস্থা না করায় তা ঝুঁকিপূর্ণ ও মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গাছটি অপসারণে উপজেলা প্রশাসন জেলা পরিষদকে কয়েক দফা চিঠি দিয়েও কাজ হচ্ছিলোনা। এরই মধ্যে গত শনিবার ও রোববারসহ বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার কয়েকজন জনপ্রতিনিধি মিলে গাছটি কেটে নিয়ে যায়। পাশাপাশি সবুজ ও তরতাজা কয়েকটি গাছও কাটা হয়েছে।

জানা গেছে, সদরের চৌরাস্তায় আওয়ামীলীগ অফিস থেকে বাসস্ট্যান্ড (উত্তম কুন্ডুর মিষ্টির দোকান) পর্যন্ত একটি লাটিম , একটি জাম, একটি বকুল গাছ ছিলো। এসকল গাছ ক্রয় করেছেন পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক কাঠব্যবসায়ি জানান, জীবিত কদম গাছের আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫’হাজার, লাটিম গাছ ৪’হাজার, জাম গাছ ২৫’হাজার ও মরা রেইন্ট্রি গাছের ১লক্ষ ৫০’হাজার টাকা।

বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, নিয়ম অনুযায়ী উন্নয়নমূলক কাজের প্রয়োজনে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকিপূর্ণ ও বয়স্ক গাছ কেটে ফেলার প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে কমিটি হবে। তাদের অনুমতির পর বন বিভাগকে মূল্য নির্ধারণের চিঠি পাঠানো হবে। বন বিভাগ সরেজমিনে যাচাই-বাছাই করে গাছগুলোর মার্কিং ও মূল্য নির্ধারণ করে দেবে। এরপর টেন্ডার ও নিলামসহ সংশ্লিষ্ট নীতিমালা মেনে গাছগুলো কাটতে হবে। কিন্তু জেলা পরিষদের এই গাছগুলো কাটতে কোনো নিয়মই মানা হয়নি।

উপজেলা বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, গত বছরের সেপ্টম্বর মাসে একটি মাত্র রেইনট্রি গাছ শুকিয়ে মারা যাওয়া গাছের মূল্য নির্ধারন করা হয়েছিল। সবুজ গাছ কাটার সুযোগ নেই ।

গাছের ক্রেতা কাঠ ব্যবসায়ী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ আমি শুধু গাছগুলো ক্রয় করেছি মাত্র। এর বেশী আমি জানিনা। এ বিষয়ে পৌর সভার মেয়র ও জেলা পরিষদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভোলা’র কাছে জানতে পারেন।

জেলা পরিষদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী ভোলা জানান,‘বিষয়টি জেলা পরিষদ জানে। কোন সমস্যা নেই, উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করার জন্য এসব গাছ বিক্রয় করা হয়েছে। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে এসব গাছ বিক্রয় করা হয়েছে’।

জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার অহেদুজ্জামান জানান, একটি মাত্র মরা রেইন্ট্রি গাছ মারার কথা ছিল। বাঘারপাড়া পৌর সভার মেয়র সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল গাছ মেরে ডাক বাংলো চত্বরে রাখবেন। কোন জীবিত গাছ মারার কথা নেই । এমনকি কোন গাছের টেন্ডার ও হয়নি।