নড়াইলসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর শেষ হচ্ছে অপেক্ষার পালাঃ ১০ অক্টোবর ‘মধুমতী সেতু’র উদ্বোধন

0
11
নড়াইলসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর শেষ হচ্ছে অপেক্ষার পালাঃ ১০ অক্টোবর ‘মধুমতী সেতু’র উদ্বোধন
মধুমতী সেতু

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দীর্ঘ প্রতিক্ষিত নড়াইলের কালনা পয়েন্টে ‘মধুমতী সেতু” উদ্বোধন হচ্ছে সোমবার (১০ অক্টোবর)। এদিন দুপুরে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুর কালনা প্রান্তে নড়াইল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০হাজার লোকের সমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নড়াইলসহ দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নড়াইলের দু’আসনের এমপি ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

পদ্মা সেতুর পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রবেশদ্বার হবে দৃষ্টিনন্দন মধুমতি সেতু। দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতুটি হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। এ সেতুর পূর্ব পারে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পারে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা। এ সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, শিল্প শহর নওয়াপাড়া, বেনাপোল স্থল বন্দরসহ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের জেলার ১০ জেলার সঙ্গে গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর-মাদারিপুর-বরিশাল-পিরোজপুর-পটুয়াখালী এবং পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। কৃষিপণ্য বেচাকেনার ক্ষেত্রেও সহজ হবে এবং নড়াইলে পর্যটন শিল্প, এবং কলকারখানা গড়ে উঠবে। সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের । নড়াইল শহর থেকে ঢাকার দুরত্ব হবে মাত্র ১২৭ কি.মি। এক্ষেত্রে নড়াইল- ঢাকার দূরত্ব কমবে ১৮১কি.মি। অর্থাৎ নড়াইল, বেনাপোল, যশোরসহ দক্ষিনাঞ্চলের অন্যন্য জেলার সড়ক যোগাযোগ ১শ থেকে প্রায় ২শ কি.মি কমবে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর নড়াইলের সুলতান মঞ্চে নির্বাচনী জনসভায় মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে এ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর কাাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ হয়েছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদার। সেতুর মাঝখানে ১৫০ মিটার দীর্ঘ স্টিলের স্প্যানটি নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা)। ওই স্প্যানের উভয়পাশের অন্য স্প্যানগুলো পিসি গার্ডারের (কংক্রিট)। চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। উভয় পাশে সংযোগ সড়ক ৪ দশমিক ২৭৩ কিলোমিটার, যার প্রস্থ ৩০ দশমিক ৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা।

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান এ প্রতিনিধিকে বলেন, সেতুর শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গাড়ি চলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তত সেতুটি। সোমবার থেকেই গাড়ি চলবে সেতুতে। নদী শাসনের কাজ পর্যায়ক্রমে করা হবে।

নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, এ সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে নড়াইল ও গোপালগঞ্জের দু’প্রান্তে দুটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সেতুর চালু হলে সারা দেশের সাথে নড়াইলসহ দক্ষিনাঞ্চলের যোগাযোগ যেমন বাড়বে তেমনি ব্যবসা-বানিজ্য, অর্থনৈতিক জোন, বিসিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড়ো বড়ো উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন। ফলে সেতুটি হবে নড়াইলসহ দক্ষিনাঞ্চলের প্রবেশ দ্বার।