নড়াইলে হাসপাতালের ইউজার ফি’র ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আ/ত্মসাতের অভিযোগ

26
25
শিশুর মৃ'ত্যু
নড়াইল সদর হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নড়াইল সদর হাসপাতালের ২১মাসের ইউজার ফি-এর (হাসপাতালের বিভিন্ন খাত থেকে আয়ের টাকা) ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আ/ত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ অর্থ জমা দেওয়ার কথা ছিল হাসপাতালের হিসাব রক্ষকের। হিসাবরক্ষক ব্যাংকে অর্থ জমা দেওয়ার কিছু চালান দেখাচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ দাবি করছে এসব চালান জাল। উল্লেখ্য, সদর হাসপাতালের সাবেক এক হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে একইভাবে ৭ বছরের ইউজার ফি-এর ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে, যা এখন বিচারাধীন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাহান আরা খানম লাকি ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই নড়াইল সদর হাসপাতালে হিসাবরক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। হাসপাতালের রোগি ভর্তি ফি, অপারেশান থিয়েটার, বহিঃ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা ফি,এক্সরে, প্যাথলজি, আলট্রাসনো ও ব্লাড ব্যাংক, কোভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহ ফি, অ্যাম্বুলেন্স, ইসিজি, কেবিন ও পেইন বেড ফিসহ বিভিন্ন খাত থেকে যে আয় হয় তা প্রতি মাসে একবার করে সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখায় জমা দিতে হয় এবং তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। কিন্তু বর্তমান হিসাবরক্ষক হাসপাতালে যোগদানের পর কোনো অর্থ জমা দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট জানা গেছে, নড়াইল সদর হাসপাতালের সাবেক হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত একইভাবে হাসপাতালের ইউজার ফি ব্যাংকে জমা না দিয়ে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। মামলাটি এখন দুদক যশোর কার্যালয়ে বিচারাধীন। মামলা নং-৪/২০২০।

অভিযোগ উঠেছে, হিসাবরক্ষক সদর হাসপাতালে যোগদানের পর ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৪৫ লাখ টাকা এবং ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৯ মাসের ২৫ লাখ টাকা ব্যংকে জমা দেননি। তবে তিনি সোনালী ব্যাংকে এসব অর্থ জমা দেওয়ার চালান দেখাচ্ছেন, যা ভুলা বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম লাকি (০১৭১১-২৩৮৪৭১) জানান,কিছু টাকা জমা দিতে বাকি আছে তা এক সপ্তাহের মধ্যে দিয়ে দেব। তবে কত টাকা বাকি রয়েছে তা বলতে পারেননি। এর বেশী আর কিছু বলতে চাননি।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর শুকুর (০১৭১৪-৩০৪১৩১) বলেন, ইউজার ফি সঠিকভাবে ব্যাংকে জমা পড়ছে কিনা তা যাচাই করার জন্য হিসাব রক্ষকের কাছ থেকে ব্যাংকের সই ও সিল স্বাক্ষরিত চালান নিয়ে মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সোনালী ব্যাংকে গিয়ে দেখি গত ২১মাসে ৭০ লাখ টাকার এক টাকাও জমা পড়েনি। সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার জানিয়েছেন চালানগুলোর সই ও সিল তাদেও না। এ ঘটনার পর হিসাব রক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছি এবং ৩ দিনের মধ্যে সমুদয় অর্থ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য বলেছি এবং তার বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তার জন্য তাকে চিঠি দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত হিসাব রক্ষককে পরবর্তীতে ইউজার ফি জমা দেওয়ার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নড়াইল সোনালী ব্যাংক প্রধান শাখার ম্যানেজার মোঃ আবু সেলিম (০৪৮১-৬২৩৩৮) বলেন, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মহোদয় যেসব চালান নিয়ে ব্যাংকে এসেছিলেন তার কোনোটিই ব্যাংকে জমা পড়েনি।