নড়াইলে লক্ষ্মী রাণীর ১০ টাকা কেজির চাল নেন হাওয়া বিবি!

0
48
নড়াইলে লক্ষ্মী রাণীর ১০ টাকা কেজির চাল নেন হাওয়া বিবি!
নড়াইলে লক্ষ্মী রাণীর ১০ টাকা কেজির চাল নেন হাওয়া বিবি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নড়াইলে নয়নপুর গ্রামে লক্ষ্মী রাণীর ওএমএসের (কার্ড নং-২৭০) ১০ টাকা কেজির চাল উত্তোলন করেন পার্শ্ববর্তী চানপুর গ্রামের হাওয়া বিবি। আর দুই বছর আগে মৃ*ত্যুবরণ করা নয়নপুরের নীলমনি বিশ্বাসের ১০ টাকা কেজির (কার্ড নং-২৭১) চাল নিয়মিত উত্তোলন করা হলেও স্থানীয় ইউপি চেয়রম্যান ও মেম্বর কিছুই জানেন না! এ ঘটনা জানাজানি হবার পর এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।

সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামে সরেজমিনে গেলে কৃষ্ণপদ সিংহের স্ত্রী লক্ষ্মী রাণী বলেন, “আমার নামে যে কার্ড আছে, সরকার যে আমারে চাল দেয় তা আমি জানতাম না। স্থানীয় চৌকিদার মোমিনুর আমার কাছে কার্ড নিতে আসলে জানতে পারি। আমার স্বামী অসু*স্থ্য আমি পরের জমিতে জন বেইচে খুব কষ্টে সংসার চালাই। তারপরে এহন করোনার জন্যি বাড়ির বাহিরে যাতি পারিনে। সরকার যদি আমাদের চাল দিতো তাহলে বাচতে পারতাম।”

নয়নপুরের নীলমনি বিশ্বাসের বাড়িতে গেলে তার ভাই অম্বর বিশ্বাস বলেন, “আমার ভাই আড়াই বছর আগে মা*রা গেছে। তার নামে যে সরকার চাল দেয় তা আমরা কেউ জানিনা। এ ব্যাপারে শাহাবাদ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ সিদ্দিকুর রহমান লক্ষ্মী রাণীর কার্ডের ব্যাপারে বলেন, যখন ভিজিডির চাল দেওয়া হতো তখন লক্ষ্মী তা পেত, পরে ১০ টাকা কেজির চালের সময়ে লক্ষ্মীর নাম পরিবর্তন করে চানপুরের হাওয়া বিবির নামে করা হয়েছে।

নীলমনির ব্যাপারে মেম্বর বলেন, নীলমনি কবে মারা গেছে তা জানিনা না। তবে এখন নীলমনির জায়গায় বিদুস বিশ্বাসের নাম দেওয়া হয়েছে এবং দুইবার মালও তুলেছে। এর আগে নীলমনির চাল কে তুলতো জানতে চাইলে মেম্বর জানেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে শাহাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন পান্না বলেন, এ ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজির ওএমএস-এর মোট কার্ড ৪শ৭৩টি। এর মধ্যে ৫নং ওয়ার্ডে ৫১টি কার্ডধারী রয়েছে। ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে তারা সংশ্লিষ্ট ডিলারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাল উত্তোলন করছেন। অফিসের তালিকায় লক্ষ্মী রাণীর নাম আছে তা জানতাম না। এই তালিকা আপডেট করার জন্য গ্রাম পুলিশদের কার্ড সংগ্রহ করতে বলি তখন বিষয়টি জানতে পারলাম। আর চানপুরের হাওয়া বিবির নামে যে কার্ড আছে তা আমার অফিসের তালিকায় নাই। মেম্বর কিভাবে এটি করেছে তা আমার বোধগম্য নয়।

এ বিষয়ে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মনির হোসেন বলেন, এ ধরনের কোন অনিয়ম হলে আমাদের অফিসের তালিকা অনুযায়ী প্রকৃত কার্ডধারী চাউল পাবে। এবং কেন এরকম হলো বিষয়টির তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, সঠিক তালিকা যাচাই বাছাইয়ের কাজ চলছে। কিছু অনিয়ম হলে আমরা তার ব্যাবস্থা নিব।