ক্রিকেটারদের ১১ দফা দাবির সাথে মাশরাফীর একাত্মতা, অনুপস্থিতির কারণ জানালেন

215
40

স্পোর্টস ডেস্ক

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ১১ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরণের ক্রিকেট থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটারসহ অন্যান্য ক্রিকেটাররা। জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও এর ভেতর অন্তর্ভুক্ত। তবে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট এর আওতায় এখনও আসেনি। এ সিদ্ধান্ত জানান তারা। দেশের ক্রিকেটে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণেই এই দাবিগুলো উঠে এসেছে বলে জানা যায়। সংবাদ সম্মেলনে দাবিসহ তামিম, সাকিব, মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক প্রায় সকল ক্রিকেটারদের দেখা গেলেও জাতীয় ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফীকে খুঁজছিলেন অনেকেই। মাশরাফীর অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে নিজ ফেসবুক পেইজে তিনি একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন তা নিম্নরূপঃ

“অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে, দেশের ক্রিকেটের এমন একটি দিনে আমি কেন উপস্থিত ছিলাম না। আমার মনে হয়, প্রশ্নটি আমাকে না করে, ওদেরকে করাই শ্রেয়। এই উদ্যোগ সম্পর্কে আমি একদমই অবগত ছিলাম না। নিশ্চয়ই বেশ কিছু দিন ধরেই এটি নিয়ে ওদের আলোচনা ছিল, প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। সংবাদ সম্মেলন দেখে আমি ওদের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

ক্রিকেটারদের নানা দাবির সঙ্গে আমি আগেও একাত্ম ছিলাম, এখনও আছি। আজকের পদক্ষেপ সম্পর্কে আগে থেকে জানতে পারলে অবশ্যই আমি থাকতাম। মিডিয়ায় ওদের খবর দেখার পর থেকে হাজারবার আমার মাথায় এই প্রশ্ন এসেছে, যে কেন আমাকে জানানো হলো না। অনেকে আমার কাছে জানতেও চেয়েছেন। কিন্তু আমি নিজেও জানি না, কেন জানানো হয়নি।

তবে আমার উপস্থিত থাকা কিংবা না থাকার চেয়ে, ১১ দফা দাবি বাস্তবায়িত হওয়াই বড় কথা। সবকটি দাবিই ন্যায্য, ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের মঙ্গলের জন্য জরুরী। আমি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, ১১ দফা দাবির পক্ষে আছি, থাকব।”

সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি পেশ করেন সাকিব-তামিম-মুশফিকরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে বলে জানান তারাঃ ১. ক্রিকেটার স্বার্থ দেখভালের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অব বাংলাদেশ (কোয়াবের) বর্তমান কোনো কার্যক্রম না থাকায় বর্তমান কমিটিকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।

২. প্রিমিয়ার লিগ আগের মত করতে হবে। বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক আগের মতো বাড়াতে হবে। বিদেশি লিগের মতো বিপিএলেও ক্রিকেটারদের হাতে প্লেয়ার্স ড্রাফটে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।

৩. এ বছর না হোক, তবে পরের বছর থেকে আগের মত বিপিএল হতে হবে, লোকাল ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বাড়াতে হবে। গ্রাউন্ডস সুবিধা ও মাঠের ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক মানের ভালো বল দিয়ে খেলা পরিচালনা নিশ্চিত করতে হবে।

৪. প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ ফি এক লাখ, বেতন বাড়াতে হবে, বারো মাস কোচ ফিজিও দিতে হবে। ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষা আলাদা আলাদা বিভাগে অনুষ্ঠিত হবে। তাদের অনুশীলনও ঢাকামুখী না করে বিভাগীয় পর্যায়ে রেখে সুবিধা নিশ্চিত করা।

৫. ডেইলি অ্যালাউন্স ১৫০০ টাকায় কিছু হয় না, তাই বাড়াতে হবে, ট্রাভেল প্লেন ভাড়া দিতে হবে, হোটেল ভালো হতে হবে। ৬. চুক্তিভূক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা ও বেতন বাড়াতে হবে। ৭. দেশি সব স্টাফদের বেতন বাড়াতে হবে, কোচ থেকে গ্রাউন্ডস, আম্পায়ার সবার বেতন বাড়াতে হবে।

৮. ঘরোয়া ওয়ানডে বাড়াতে হবে, বিপিএলের আগে আরেকটি টি-টোয়েন্টিতে খেলতে চায়। ৯. ঘরোয়া ক্যালেন্ডার নির্দিষ্ট করতে হবে। ১০. বিপিএলের পাওনা টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। ১১. ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ দুইটির বেশি খেলা যাবে না এমন নিয়ম তুলে দিতে হবে। সুযোগ থাকলে সবাই খেলবে।