আমরা কি জানি আমরা কি ভাইরাল করছি?

190
8

নিউজ ডেস্ক

কয়েকদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। প্রচারে বলা হয়, প্রাইভেট পড়ানোর দায়ে এক শিক্ষকের হতে পড়ানো হয়েছে হাতকড়া। আসলে যা আমরা ভাইরাল করি, শেয়ার করি তার সত্যতা কতটুকু? আমরা কি জানি আমরা কি ভাইরাল করছি? না জেনে মিথ্যা প্রচার করে সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে দেই। নিজেও বুঝি না, অন্যকে বিভ্রান্তিতে রেখে দেই।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীরা   বলছেন, যেখানে ভয়াবহ সব অপরাধ করেও যেখানে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে; সেখানে পেটের দায়ে প্রাইভেট পড়ানো এই শিক্ষকের হাতে হাতকড়া উঠবে কেন? আজকাল সোশ্যাল সাইটে কেউ একটা কিছু পোস্ট করলেই বিনা বাক্যব্যয়ে সবাই তা বিশ্বাস করে। কথিত এই শিক্ষক (!) গ্রেপ্তারের ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পেছনে নেটিজেনদের অন্ধবিশ্বাসই দায়ী। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। তিনিই ফেসবুকে মূল ঘটনাটি প্রকাশ করেছেন।

“মেডিকেল নামক কারাগার থেকে বলছি ” নামক পেইজ থেকে বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। সেই পেইজের অ্যাডমিনকেও ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।  তাহলে এবার জেনে নিন এই ছবির পেছনের আসল গল্প :

আবু সাঈদ নিজের ফেবসুক পেইজে লিখেছেন, ‘আমার_জবানবন্দিঃ #বিষয়ঃ শিক্ষকের হাতে হাতকড়া নিয়ে বিভ্রান্তি। গত কয়েকদিনের ঘটনা আপনারা সবাই জানেন। মূল ঘটনা সবার জানা দরকার।

ঘটনার দিন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক এস,এস,সি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোচিং সেন্টার বন্ধের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই অভিযান পরিচালনা করি। ‘স্মরণী’ নামক কোচিং সেন্টারে আমরা দেখতে পাই একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলমান। উক্ত কোচিং সেন্টারটিকে পরীক্ষা শুরুর আগে আমরা সতর্ক করেছিলাম কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য। ‘

‘সুতরাং সরকারি আদেশ অমান্য করার কারণে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারা মোতাবেক ০৭ দিনের কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়। কোচিং এর সকল শিক্ষককে আমরা সসম্মানে বিদায় করে দিয়ে শুধু ম্যানেজারকে ( যিনি অষ্টম শ্রেণি পাস ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্ন পত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা) আইনের আওতায় নিয়ে আসি। দণ্ড আরোপের পর উক্ত পরিচালক পলায়নের চেষ্টা করে, ফলশ্রুতিতে র‌্যাব তাকে হাতকড়া পরায়। কিন্তু এটি আমার দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তাৎক্ষণিক হাতকড়া খোলার নির্দেশ দেই এবং ছবিটা হাতকড়া খোলার, লাগানোর নয়। ‘

‘ঘটনার দুই দিন পর “#মেডিকেল_নামক_কারাগার_থেকে_বলছি ” একটি গ্রুপ থেকে ম্যানেজারকে শিক্ষক বানিয়ে ও কোচিংকে প্রাইভেট বানিয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে সকল শিক্ষক সমাজের সহানুভূতি নিয়ে নিজের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করে, যা বিভিন্ন গ্রুপে বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে শেয়ার হয়। যা আইসিটি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইতোমধ্যে র‌্যাব এই পেজের অ্যাডমিনকে ধরতে কাজ শুরু করেছে। ‘

‘প্রাথমিক তদন্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। সুতরাং একজন নির্বাহী হাকিম হিসেবে কীভাবে শিক্ষকদের সম্মান দিতে হয়, তা আমি জানি, কারণ আমিও কোনো এক শিক্ষকের ছাত্র ছিলাম। সবশেষ যারা আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন, তাদের সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ। ‘