গণতন্ত্র সুসংহতকরণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

184
5

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে গণতন্ত্র সুসংহত এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমরা দেশের গণতন্ত্র সুসংহত এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি।’ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বৃত করে একথা বলেন। এ সময় কমনওয়েলথ মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখার ব্যাপারে তার সংস্থা সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বিগত সাড়ে ৯ বছরে উপনির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায় প্রায় ৬ হাজারেরও বেশি নির্বাচন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এসব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’ সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সফলভাবে এই সামাজিক ব্যাধি মোকাবেলা করেছে।

রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন,‘আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় জনগণের চাষাবাদের জমিগুলো রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দখল করে নেয়ায় স্থানীয়রা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মুখে পড়েছে। তিনি আবহাওয়াকে তাঁর সরকারের একটি বড় উদ্বেগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে নারীর ক্ষমতায়ন করা হয়েছে এবং এই নারী সমাজের একটি বড় অংশ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। আমরা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছি।

দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি এখন ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশে উপনিত হয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকারের বিভিন্ন সময়োচিত পদেক্ষপের কারণেই তা সম্ভব হয়েছে, – বলেন তিনি।

তাঁর সরকার সকল ধরণের খেলাধূলাকে উৎসাহিত করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দল এশিয়া কাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, ছেলেদের ক্রিকেটেও তারা ভালো ফল করছে। কমনওয়েলথ মহাসচিব বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদানকে এ সময় বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট বোঝা বলেও উল্লেখ করেন।

প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কমনওয়েলথ ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটানোর আহবান জানিয়ে বলেন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে ব্যবসা ক্ষেত্রের বাধাসমূহ কমিয়ে আনা প্রয়োজন এবং এসএমই নেটওয়ার্ক জোরদার করার জন্য কানেকটিভিটির সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে।

মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ আরো বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি এ সময় সন্ত্রসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূমিকারও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড লন্ডনে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রদত্ত ভাষণেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি সম্প্রতি কেনিয়াতে অনুষ্ঠিত আন্তঃধর্মীয় সম্মেলনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধির দেওয়া বক্তব্যই সব থেকে সেরা ছিল।’

বৈঠকে ক্রিকেট বিষয়ক আলোচনায় প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড একটি কমনওয়েলথ ক্রিকেট ক্লাব গঠনের পাশাপাশি কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় এই খেলাটির উন্নয়নে কমনওয়েলথ ক্রিকেট লীগ চালু করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন। প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কমনওয়েলথ সনদের একটি কপিও প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন। বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তিন দিনের সফরে গত বুধবার কমনওয়েলথ মহাসচিব বাংলাদেশে আসেন।