বাস চাপায় শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ভাঙচুর

12
5

ডেস্ক রিপোর্ট

বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানী ঢাকাতে টানা তৃতীয় দিনের মত বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালিয়েছে স্কুল কলেরেজ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বেশ কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরও চালান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধসহ ৯ দফা দাবিতে আজ (মঙ্গলবার) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

সকাল ১০টার দিকে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে দুর্ঘটনাস্থলে মানববন্ধন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশি বাধায় তাদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এরপর থেকে এমইএস বাস স্টপেজ থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত বাড়তি পুলিশের সতর্কাবস্থা দেখা গেছে। এদিকে সকাল থেকে ফার্মগেট ওভার ব্রিজের নিচে রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নেন সরকারি বিজ্ঞান কলেজসহ আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

মিরপুর-১ নম্বর সনি সিনেমা হলের সামনে এবং মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে অবস্থান নেন কমার্স কলেজ, শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। মিরপুর ১০ নম্বরে বিক্ষোভরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ চড়াও হলে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এছাড়া মিরপুর ১ নম্বরে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করলেও পুলিশের তৎপরতায় ঘণ্টাখানেক পর রাস্তা থেকে সরে যান তারা।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির জানান, সনি সিনেমা হলের সামনে বেশ কিছু শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। তবে সেখানে কোনো ধরনের ভাঙচুর বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। কিছু সময় শিক্ষার্থীরা সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।

বেলা ১২টার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বর মোড় অবরোধ করে অবস্থান নেন নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অবস্থানে রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলের যোগাযোগ অচল হয়ে পড়ে।

সাইন্সল্যাব মোড়ে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও গাড়ি ভাংচুর চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গ বেশ কয়েকবার ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশের ধাওয়ায় ছাত্ররা সরে গেলে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।

রামপুরা ব্রিজের উপর ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও মধ্যবাড্ডায় গুলশান কমার্স কলেজ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে পুরো মালিবাগ-বাড্ডা পর্যন্ত অচালবস্থা সৃষ্টি হয়। এ সড়কে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

শেরেবাংলা বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও আশেপাশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিরপুর রোডের আগারগাঁও ও শ্যামলীর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। ফলে ওই দুই সড়কেই দুই ঘণ্টারও বেশি সময় যান চলাচল বন্ধ থাকে।

বিমানবন্দর-গাজীপুর সড়কের দুইপাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে বিমানবন্দর সড়কে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের কয়েকদফা লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

এদিকে সকালের দিকে কোনো কোনো এলাকায় বাস থাকলেও বিকেলে গুলিস্তান, পল্টন, প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন, শাহবাগ, বাংলা মোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট এলাকায় রাস্তা ছিল প্রায় ফাঁকা। এসব এলাকায় হাজারো মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। একটি-দুটি বাস আসতেই  হুমড়ি খেয়ে উঠছেন যাত্রীরা।