মধ্যরাতে সুফিয়া কামাল হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার অভিযোগ

11
15

ডেস্ক রিপোর্ট

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছাত্রীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। হল প্রশাসন অভিভাবক ডেকে এনে তাদের বের করে দিয়েছে বলে ছাত্রীরা অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮ টার পর থেকে তারা হল ত্যাগ করেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, ফোন কেড়ে নিয়ে ফেইসবুকে কে কোন পোস্ট দিয়েছে তা পরীক্ষা করার পাশাপাশি কয়েকজনকে হল থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা ফারুক হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে হল থেকে একজন মহিলা ফোন দিয়ে হলে আসতে বলেছে। তখন আমি বললাম আমার বাসা ধামরাই। আমি ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে কীভাবে আসব। তখন ওই মহিলা আমাকে বলে হলে আপনাকে আসতেই হবে। আমি কিছু বলতে পারব না।

সাধারণ ছাত্রীরা হলের এই অবস্থানের বিরোধিতা করছেন। তাঁরা মারাত্মক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা বলছেন হলের প্রাধ্যক্ষ আরও বহু ছাত্রীর ছাত্রত্ব বাতিল করে দেওয়া, গোয়েন্দা নজরদারি ও মামলার ভয় দেখাচ্ছেন।

সাবিতা রেজওয়ানা বলেন, আমরা অনেক ছাত্রীকে ডেকেছি। তাদের মোবাইল চেক করা হচ্ছে। তারা বিভিন্ন ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব ছড়াচ্ছে। মুচলেকা দিয়ে তাদের স্থানীয় অভিভাবকের সঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকদের সামনেই বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে হল থেকে বের করে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, আমি ঘটনাটা শুনেছি। প্রাধ্যক্ষকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করব।

কোটা পদ্ধতির সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবিতে দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও জেলা পর্যায়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছিলেন চাকরি প্রত্যাশীরা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি না থাকায় প্রশাসনিক কাজকর্মে স্থবিরতা দেখা দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা ১২ এপ্রিল আন্দোলন স্থগিত করেন।

বিভ্রান্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রীদের বের করে দিচ্ছে কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ। হলের প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রেজওয়ানা নিজেই বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে একথা জানান।

রাতে আটজনকে বের করে দেওয়া হয়েছে। হল কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, রাত ৯টা থেকে কমপক্ষে ৫০ জনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে সবাইকে একসঙ্গে বের করে দেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলের ফ্লোরে ফ্লোরে রাতে হাউস টিউটররা পাহারা বসান। ছাত্রীরা আতঙ্কে আছেন। তাঁরা বলছেন, মূলত যে ২৬ ছাত্রী ছাত্রলীগ নেত্রী ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রথম ধাপে তাদের বিচার করছে হল প্রশাসন।

এদিকে, এর প্রতিবাদে শুক্রবার বিকাল ৪টায় সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে কোটা অধিকার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।