নড়াইলে পিআইও অফিসের কোটিপতি কে’রানি মনিরুজ্জামান বহা’ল তবি’য়তে

3
34
নড়াইলে পিআইও অফিসের কোটিপতি কে'রানি মনিরুজ্জামান বহা'ল তবি'য়তে
নড়াইলে পিআইও অফিসের কোটিপতি কে'রানি মনিরুজ্জামান বহা'ল তবি'য়তে

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিসের অফিস সহকারী মোঃ মনিরুজ্জামান মুকুল কে’রানি থেকে আজ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। নিজে চলাচল করেন ভিআইপি স্টাইলে। মনিরুজ্জামান হঠাৎ করেই এত সম্পদের মালিক হওয়ায় নড়াইল জুড়ে বইছে নানা আলোচনা-সমা’লোচনার ঝড়। ক্ষ*মতার অ*পব্য’বহার করে তিনি এ বিশাল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বলে অভিযো*গ উঠেছে।

এদিকে, নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার ডিও লেটার ১১দিন অতিবাহিত হলেও তার কোন বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। অপরদিকে বহাল তবি’য়তে রয়েছেন পিআইও অফিসের অফিস সহকারী মনিরুজ্জামান মুকুল। অফিসের বস থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভা*বশালী জনপ্রতিনিধিদেরও পা*ত্তা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরু*দ্ধে। অফিস সহকারীর খুঁ*টির জো*র কোথায় এমন প্রশ্ন ঘু’রপা’ক খাচ্ছে নড়াইলের অ’লিতে-গ’লিতে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন অ*নিয়ম-দু’র্নীতির সঙ্গে স’ম্পৃক্ত উক্ত কোটিপতি অফিস সহকারী মনিরুজ্জামানের দ্রুত ব*দলীসহ অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানিয়ে দু*র্যোগ ও ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে ডিও লেটার প্রদান করেছেন ৯৪, নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। তিনি মনিরুজ্জামানের বিরু*দ্ধে ইতিপূর্বে অধিদপ্তরে প্রেরিত তদা*ন্তাধীন বিভিন্ন অ*নিয়ম-দু’র্নীতির অভি*যোগসহ লোহাগড়া উপজেলা পিআইও, ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের সুপারিশের কথাও উল্লেখ করেছেন তাঁর ডিও’তে।

অপরদিকে, গত ১৬ আগস্ট তার বিরু*দ্ধে জ্ঞা*ত আয় বহির্ভূ’ত বিপুল পরিমাণ অ*বৈধ সম্পদ অর্জন করায় নড়াইলের জনৈক ব্যবসায়ী মিলন খান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবরসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযো*গ করেন। ওই অভিযোগের কারণে ৫১.০১.০০০০.০০৪.১৮.৪০১.৪৮৩ নং স্মারকে ৬ সেপ্টেম্বর যার তদ*ন্ত প্রতিবেদন দু*র্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, মহাখালী ঢাকার উপপরিচালক (প্রশাসন-২) ড. হাবিবউল্লাহ বাহার জেলা প্রশাসক, নড়াইলকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই দপ্তরে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ওই তারিখে তদ*ন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়নি বলে জানা গেছে।

মিলন খানের লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এগারো নলী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মো. মকসেদ মোল্যার ছেলে মো.মনিরুজ্জামান মুকুল পিআইও অফিসের ১৫ হাজার ৯৬০টাকা বেতনের তৃতীয় শ্রে’ণির কর্মচারী। তিনি গত ১০বছরে বরগুনা, মাগুরা, নড়াইল সদর ও লোহাগড়া পিআইও অফিসে চাকুরী করেছেন। বর্তমানে লোহাগড়া পিআইও অফিসে তিনি একাই একশ। কাউকে তোয়া*ক্কা না করে দুই হাতে অ*বৈধ পন্থায় কামিয়ে নিচ্ছেন টাকা।

অফিস সহকারীরর দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় অ*বৈধ লেন-দেনের বিনিময়ে অর্জিত টাকা দিয়ে লোহাগড়া পৌর শহরের মদিনা পাড়ায় ৮ শতক জায়গার ওপর কোটি টাকায় বিলাসবহুল একটি দ্বিতল আলিশান ভবন নির্মাণ করেছেন। এছাড়া মনিরুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি এগারো নলীতে আরো একটি দ্বিতল বাড়ি নিমার্ণ করেছেন। পাশাপাশি তার নিজ নামে মাগুরা পৌর শহরের পার নান্দুয়লী গ্রামে ৭ শতক দামি জমি, বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের পাশে এক খন্ড জমি, লাহুড়িয়া মৌজায় ২৪ শতক করে দু’টি জমি, এগারো নলীতে আরো ৩০ শতক জমিসহ বিঘায় বিঘায় সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। এ ছাড়া নামে-বে*নামে আরও সম্পদ রয়েছে, রয়েছে ব্যাংক ব্যালেন্সও। তার টাকায় দুই সহোদর ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে।

তিনি অ*নৈতিকভাবে তার মালিকানাধীন দু’টি বিলাস বহুল বাড়িতে দুটি ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের সরকারি স্ট্রিট লাইট ও একটি লক্ষাধিক টাকা মূল্যের এসিডিসি বসিয়েছেন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও চলেন রাজার হালে, উঠা-বসা, চলাফেরা হাই-প্রোফাইল লোকদের সঙ্গে। স্থানীয় প্রভাব আর ক্ষ*মতার অ*পব্য’বহার করে পিআইও অফিস থেকে অন্যের নামের লাইন্সেসে বিভিন্ন সময়ে অনেক কাজ বাগিয়ে নেন। বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে অ*শো’ভন আচারণ করে তাদের কাজের থেকে মাসো*হারা নেন।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, মনিরুজ্জামানের ওই সমস্ত সম্পদের আনুমানিক মূল্য হবে পাঁচ কোটি টাকা। এসকল সম্পত্তি তিনি কিভাবে অর্জন করেছেন তা খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে রহস্যজনক কারণে বা*ধাগ্র*স্ত হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনি*চ্ছুক একাধিক সূত্র অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে ধীরগতিতে তদ*ন্ত কাজ এগুচ্ছে। তার খুঁ*টির জো*রটা বেশ শক্ত বলে বিশ্বস্ত সূত্রের অভিযো*গ।

অভিযো*গ প্রসঙ্গে মনিরুজ্জামান মুকুল বলেন, ‘আমার নামে মি*থ্যা অভিযো*গ করে অহে*তুক হয়*রানি করা হচ্ছে। আমি কখনো কোন দু*র্নীতির সঙ্গে জ*ড়িত ছিলাম না। তবে আমার নামে বর্তমান বাজার মূল্যের ৫০-৬০লাখ টাকার সম্পদ আছে। যা আমি বর্তমান চাকুরীর আগে ও পরে বৈধভাবে টাকা আয় করে রেখেছি। আমার নামে অভিযোগকৃত কোটি কোটি টাকার সম্পদের কোন অ*স্তিত্ব নেই।’

মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদ*ন্ত সম্পর্কে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা শুক্রবার দুপুরে বলেন, ‘অভিযোগের তদ*ন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত শেষে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।’ একই প্রসঙ্গে লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এসএমএ করিমের মতামত জানতে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।