নড়াইলে বীমা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

1
83

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইল পৌরসভার দুর্গাপুর গ্রামের প্রায় ৩০টি পরিবারের নিকট থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বীমা কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী এসব পরিবারগুলো পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দীনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। প্রতারক বীমা কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর বর্তমান গাঁ ঢাকা দিয়েছেন।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীদের অভিযোগ পাঁচ বছর আগে বীমা কর্মকর্তা প্রতারক আলম মোল্যা (৪০)ও তার স্ত্রী নিশি সুলতানা খুকু (৩৫) দম্পতি পৌরসভার দুর্গাপুর গ্রামে জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। সেখানে বসবাসের সুবাদে প্রতিবেশিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। আলম মোল্যার গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামে। তিনি পপুলার লাইফ ইন্সুইরেন্স কোম্পানির নড়াইল শাখা অফিসের কর্মকর্তা। ওই দম্পতি প্রতিবেশি পরিবারের সদস্যদের বিদেশে পাঠানো,ঢাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, দ্বিগুণ মুনাফা ও বড় ধরনের লাভ দেয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে গরিব অসহায় ও সংখ্যা লঘুদের নিকট থেকে প্রায় ৫০লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জানা যায়, সমাজের অসহায়, দুস্থ, অভাবী ও হিন্দু তথা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনদের ওই দম্পতির প্রলোভনের ফাঁদে ফেলেন এবং সফলও হন।

দূর্গাপুরের ভুক্তভোগী নিখিল চক্রবর্তী, বাবুরাম বিশ্বাস, রঞ্জিত দাস, নিখীল দাস, উত্তম দাস, বিশু বিশ্বাস,অঞ্জু দাস,কানন বালা দাস, মাধুরী বিশ্বাস,কনকলতা ঘোষ,কল্পনা বিশ্বাস, পরিষ্কার বিশ্বাস, আরতী বিশ্বাস, শখা বালা ভট্ট, খলিল শেখ, আজগর আলী, নাসিমা বেগম, আফাজ মোল্যাসহ আরও কয়েকটি অসহায় পরিবারের সদস্যদের কাজে লাগিয়ে তাদের মাধ্যমে নড়াইলের বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান, ইসলামী ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, নোভা, টিএমএসএস, প্রত্যাশা, আঁশার আলো, ব্র্যাক, পল্লী দরিদ্র ফাউন্ডেশন, বিআরডিবিসহ বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণের টাকা উঠিয়ে প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে সব টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এখন ওই দম্পতি আত্মগোপন করে আছে বলে জানা গেছে।

সরজমিনে দেখা যায়, ওই সকল এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ভুক্তভোগী পরিবার গুলোকে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন। ভয়ে অনেকে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই ভুক্তভুগী বিশু বিশ্বাস তার ঋণের তিন লক্ষাধিক টাকা পরিশোধ করতে না পারায় পরিবারসহ ভারতে পাড়ি দিয়েছেন।

গ্রামবাসীরা জানায়, ‘প্রতারক আলম মোল্যা ক্ষমতাসীন লোকদের টাকা খাইয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চাইছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদফা নড়াইল সদর থানা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের দারস্থ হয়ে সালিশি করা হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

এ প্রসঙ্গে আলম মোল্যা বলেন, ‘একটি মহল আমার ভাবমূর্ত্তী ক্ষুন্ন করার জন্য পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। বরং আমি নিজেই পুুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেছি।’