নড়াইলে ৫ বছর আগে ১৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি পোতা হলেও দু’শত পরিবার এখনও অন্ধকারে

1
52

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইল পৌরসভার দক্ষিণ নড়াইল এবং সংলগ্ন মুলিয়া ইউনিয়নের নুনীক্ষীর গ্রামের দু’কিঃমিঃ রাস্তায় ৫ বছর অগে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ১৫টি বৈদ্যুতিক খুটি পোতা হলেও দু’শতাধিক পরিবার এখনও অন্ধকারে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ দুটি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ওজোপাডিকোর দুই সিবিএ নেতা বৈদ্যুতিক খুটি, তার, আনুসঙ্গিক খরচ ও সংযোগ বাবদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিলেও এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছায়নি।

নুনীক্ষীর গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সভাপতি সাহেব আলী মীর, সমিতির সদস্য সুজিত বিশ্বাস জানান, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে দক্ষিন নড়াইলের একাংশ ও নুনীক্ষীর গ্রামের দু’কিঃমিঃ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ (ওজোপাডিকো) নড়াইল-এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর দরখাস্ত করা হলেও বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে ব্যর্থ হই। তখন সরকার দলীয় সিবিএ নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ মাধ্যমে ওজোপাডিকোর নড়াইল অফিসের ৩য় শ্রেণির কর্মচারি(ইউডিএ) সরকার সমর্থিত তৎকালীন বিদ্যুৎ শ্রমীক লীগ নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি মোঃ তৈহিদুজ্জামানের যোগসাজসে বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নড়াইল অফিসের এমএলএসএস লাইবুর রহমানকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এ দু’টি এলাকার ৭০টি পরিবারের কেউ গরু, ছাগল, মুরগি বা ফসল বিক্রি করে এ অর্থ সংগ্রহ করে। এর কয়েক কয়েক মাস পর ২০১৫ সালের মার্চ ও এপ্রিল মাসে দু’দফায় ওই এলাকায় ১৫টি বৈদ্যুিতক খুটি পোতা হয় এবং তার সংযোগস্থলে নেওয়া হলেও বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান বন্ধ হয়ে যায়।

জানা গেছে, নড়াইল ওজোপাডিকোর তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী রজব আলী বিশ্বাস বিষয়টি যশোর ওজোপাডিকো-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিনকে (পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল) অবহিত করলে এ ঘটনায় ওজোপাডিকো, যশোরের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সায়েদ আলীকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ২০১৫ সালের ৪ আগষ্ট তদন্ত কাজ শুরু হয়। তদন্তে লায়েবুর রহমান দোষী সাবস্থ প্রমানিত হলে শাস্তি স্বরুপ বরগুনায় বদলী হলেও এলাকাবাসী আর বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। উল্লেখ্য, সংযোগ দেওয়ার জন্য ওই এলাকায় নেওয়া অধিকাংশ তার চুরি ও নষ্ট হয়ে গেছে এবং কয়েক বাড়িতে এখনও তা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

সুজিত বিশ্বাস (০১৭১৭-৮৯২৯৮২) জানান, সর্বশেষ ১০ দিন পূর্বে তৌহিদুজ্জানকে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যাপারে কথা বললে তিনি লেবারের খরচ-খরচার জন্য আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেবার কথা বললেও অমরা নড়াইল বিদ্যুৎ অফিসের কিছু ব্যক্তির কাছে অমরা বার বার হয়রানির স্বীকার হচ্ছি।

এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত লাইবুর রহমানকে (০১৯২১-১৬০১৯৪) ফোন দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সিবিএ নেতা মোঃ তৈহিদুজ্জামান (০১৮৩৩-৬৪২৫২৬) বলেন, দক্ষিন নড়াইল ও নুনীক্ষীর এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগের ঘটঁনার সাথে তার বিন্দুমাত্র কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এছাড়া যেসব ঠিকাদার এসব সংযোগের কাজ করে থাকে তাদের সাথে সুজিত বিশ্বাসের কথা বলিয়ে দিয়েছিলাম। এখানে টাকার কোনো কথা হয়নি।

এ ব্যাপারে নড়াইল ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিঃ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবু রায়হান এ প্রতিনিধিকে (০১৭০০-৭০৯৮১৫) ফোনে বলেন, এ ব্যাপারে কিছু কিছু বিষয় জানা আছে। এটা অনেক দিন পার হয়েছে। উত্তেজিত কন্ঠে বলেন, আপনারা এতো দিন কোথায় ছিলেন? আমাদের কাছে কোনো ডুকুমেন্ট নেই। আপনাদের কাছে কি ডুকুমেন্ট আছে নিয়ে অফিসে আসেন। নুনীক্ষীর ও দক্ষিন নড়াইলের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নেই। যেসব জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেই তার জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে।