নড়াইল ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার প্রার্থী

4861
647

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থী নীনা ইয়াছমিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অপর তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী। আগামি ১৫ মে দিঘলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নীনা ইয়াছমিনসহ নির্বাচনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গত ৮ এপ্রিল দিঘলিয়া ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এ নির্বাচনে আ’লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী নীনা ইয়াছমিন বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে আমি ভোট প্রার্থনা করছি। ভালো সাড়া পাচ্ছি। বিজয়ী হলে আমার স্বামীর অসমাপ্ত কাজগুলো সম্পূর্ণ করে ইউনিয়নবাসীর সেবা তথা অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চাই। এছাড়া জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করব।

এদিকে বিএনপি প্রার্থী এস এম মাকছুদুল হক (ধানের শীষ প্রতীক) এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে গেলে তিনি কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।

তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নীনা ইয়াছমিনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসাবে মাঠে আছে দিঘলিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি স ম ওহিদুর রহমানের (আনারস প্রতীক) সমর্থকেরা। তিনি (ওহিদুর) মামলার আসামি হওয়ায় বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসাবে ‘চশমা’ প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন জাতীয় শ্রমিক লীগ লোহাগড়া উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি সাহিদুল আলম। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী ওহিদুর রহমানের ভাই মুক্তিযোদ্ধা সরদার আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা আনারস প্রতীকের জন্য ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ভোট চাচ্ছি। সঠিক ভাবে নির্বাচন হলে আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হবে ইনশাল্লাহ। তিনি দাবি করেন আরো বলেন, আমার ছোট ভাই ওহিদুরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে বিজয়ী করে ভোটাররা এ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানাবেন বলে আমরা আশাবাদী। আমার ভাই বিজয়ী হলে ইউনিয়নে বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন হবে। ‘চশমা’ প্রতীকের প্রার্থী সাহিদুল আলম বলেন, প্রশাসনের কাছে আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করছি। এক্ষেত্রে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকার আহবান জানাচ্ছি। আমি বিজয়ী হলে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত জনপদসহ প্রতিহিংসার রাজনীতি দুর করব।

দিঘলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে পেশাজীবী মানুষসহ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনে নীনা ইয়াছমিন, ওহিদুর রহমান ও সাহিদুল আলমের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। বিশেষ করে নীনা ইয়াছমিন ও ওহিদুর রহমানের ক্ষেত্রে এ নির্বাচন মর্যাদার লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্বামী হারানো বেদনার পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদটি যেমন পুনরুদ্ধার প্রয়োজন, তেমনি বিজয়ের মধ্য দিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে দলীয় আস্থা অর্জন করা। কারণ ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন নীনার স্বামী লতিফুর রহমান পলাশ। ওই নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন আ’লীগ নেতা মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তিনিও (মাসুদ) পলাশ হত্যা মামলার আসামি।

অন্যদিকে কারাবন্ধী চেয়ারম্যান প্রার্থী ওহিদুর রহমানের পরিবারের সদস্যসহ তার সমর্থকেরা বলেন, বিজয়ের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে চান; ওহিদুর রহমান এলাকার জনপ্রিয় ও যোগ্য ব্যক্তিত্ব। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর দিঘলিয়া ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৯৪৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৯৮৬ এবং নারী ভোটার ৮ হাজার ৯৬১। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, সুষ্ঠু সুন্দর ভাবে নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দিঘলিয়া ইউনিয়নবাসী নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে পারবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করছি।