আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী

63
11

আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী

নিউজ ডেস্ক

আজ ২৫ মে, ২০১৮। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী। জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্ণাঢ্য র‍্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তাঁদের পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।

রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ তার বাণীতে উল্লেখ করেন, “আমাদের কর্ম, চিন্তা ও মননে কবি নজরুলের অবিনশ্বর উপস্থিতি বাঙালি জাতির প্রাণশক্তিকে চিরকাল জাগরিত রাখবে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে তুলে ধরেন, “বাংলা সাহিত্যের বিস্ময়কর এক প্রতিভা জাতীয় জাগরণের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মানবতা ও সাম্যের কবি নজরুল, আমাদের প্রাণের কবি। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবি নজরুল একাধারে ছিলেন গল্পকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, সম্পাদক ও অনুবাদক। অনন্য সাধারণ লেখনীর মাধ্যমে কবি আমাদের সাহিত্য, সংগীত ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলা সাহিত্যে তাঁর রচনার বিদ্রোহী চেতনার যেমন অসামান্য রূপায়ণ ঘটেছে তেমনি প্রেম-প্রকৃতি ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যবোধ প্রতিফলিত হয়েছে।”

নজরুল চর্চার মাধ্যমে দেশপ্রেম ও সততা দিয়ে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নতুন প্রজন্মকে আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ  (২৫ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন কাজী ফকির আহমদ। তিনি ছিলেন মসজিদের ইমাম ও মাযারের খাদেম। নজরুলের মাতার নাম জায়েদা খাতুন। ১৯০৮ সালে মাত্র নয় বছর বয়সে তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। জীবিকা অর্জনের জন্য মাত্র ১০ বছর বয়সেই তাঁকে কাজে নামতে হয়। প্রাথমিক জীবনে তিনি ছিলেন কবরের সেবক ও মসজিদের মুয়াজ্জিন। একই সাথে মক্তব থেকে নিম্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং উক্ত মক্তবেই শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।

বাল্যকালে একটি লেটো যোগদেন নজরুল। লেটো ছিল রাঢ় অঞ্চলের দলের একট নাট্যদল। লেটো দল থেকেই তার অভিনয় এবং সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। ১৯১০ সালে লেটো ছেড়ে ছাত্রজীবনে ফিরে আসেন।

১৯১৪ সালে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। ১৯১৫ সালে তিনি আবার রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে গিয়ে সেখানে অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষার না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। ১৯২০ সাল থেকে তিনি সাংবাদিকতা ও সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন।

১৯২২ সালের ১২ আগস্ট “ধূমকেতু” প্রকাশ করেন নজরুল। ধূমকেতুর একটি সংখ্যায় তাঁর ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ প্রকাশিত হলে সংখ্যাটিকে নিষিদ্ধ করা হয়। ২৩ নভেম্বর নজরুলের প্রবন্ধগ্রন্থ যুগবাণী বাজেয়াপ্ত হয় এবং একই দিনে গ্রেপ্তার হন তিনি।

১৯৪২ সালের জুলাই থেকে ১৯৭৬ সালের আগস্ট পর্যন্ত কবির এক অসহনীয় নির্বাক জীবন পার করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের মে মাসের ২৪ তারিখে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে তাঁর বসবাসের ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধু ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন যা এখন নজরুল ইনিস্টিটিউট। ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ (১২ ভাদ্র ১৩৮৩) ঢাকার পিজি হাসপাতালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জাতীয় কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের উত্তর পার্শ্বে সমাহিত করা হয়।

আরো জানতে ক্লিক করুন:

কাজী নজরুল ইসলাম- http://bn.banglapedia.org/index.php?title=ইসলাম,_কাজী_নজরুল